 
              প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩, ০৫:০৮ পিএম
-20230228050818.jpg) 
                 ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে। চলতি বছরে ভারত সফর করবেন ট্রুডো। সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে ট্রুডোর। সে সময়ে তাকে বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সফররত কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী হারজিত এস সজ্জনের সঙ্গে বৈঠক পরবর্তী যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ড. মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশেষ করে দাওয়াত দিয়েছি ওনাদের প্রধানমন্ত্রীকে (জাস্টিন ট্রুডো)। ওনাকে দাওয়াত দিয়েছি, বাংলাদেশ আসার আসার জন্য। আমরা বলেছি, এ বছর যদি আসতে পারেন, সেপ্টেম্বরে জি-২০ সম্মেলনে তখন যদি ম্যানেজ হয়; এটা হবে প্লাস প্লাস। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী সজ্জন জানান, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দিবো।
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ দেবে কানাডা
এদিকে যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে কানাডার উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী জানান, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যাবাসন তথা পুঞ্জিভূত ওই সংকটের টেকসই সমাধানে বিশ্ববাসীর সঙ্গে কানাডাও মিয়ানমারের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলাপ করেছি।
এই সংকট কাটাতে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাবে কানাডা। মন্ত্রী হারজিত বলেন, বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই। এই সংকট কাটাতে কানাডা বাংলাদেশকে আরও তহবিল দিয়ে সহযোগিতা করবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘ সময় আলাপ হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের কানাডা অতিরিক্ত তহবিল দেয়ার কথা বলেছে। তারা ভাসানচর প্রকল্পেও সহায়তার অঙ্গীকার করেছে। আমরা আরও কিছু প্রস্তাব করেছি, কানাডা কিভাবে আরও বেশি করে সাহায্য করতে পারে তা নিয়ে কথা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরাতে আইনি জটিলতা
বৈঠকে কানাডায় লুকিয়ে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কানাডার মন্ত্রী বলেন, নূর চৌধুরীকে ফেরত দেয়ার বিষয়টি কানাডার আদালতে প্রক্রিয়াধীন। আদালতের বিষয় নিয়ে আমরা রাজনৈতিক ব্যক্তিরা কোন মন্তব্য করে থাকি না। তবে এটা বলতে পারি যে, বিষয়টি সঠিক প্রক্রিয়ায় চলছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা নূর চৌধুরী সম্পর্কে বলেছি। এটা একটা লিগ্যাল প্রসেস (প্রক্রিয়া)। এ নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব খুব একটা কিছু বলতে পারেন না।
স্টুডেন্ট ভিসা সহজ করার অনুরোধ এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ
বৈঠকে একাধিক ইস্যু নিয়ে আলাপ হয়েছে বলে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে আরো বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলাপ করেছি। কৃষি খাতের গবেষণা এবং উদ্ভাবন নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমাদের ছাত্ররা কানাডায় পড়াশোনা করতে গেলে ভিসা জটিলতার মুখোমুখি হয়। এটি নিরসনসহ ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ করার অনুরোধ করেছি।
মন্ত্রী মোমেন বলেন, ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উত্তীর্ণ হবে। এলডিসি উত্তরণের পর আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত কানাডা যাতে বাংলাদেশকে ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে জিএসপি সুবিধা দেয় সেই অনুরোধ করেছি। তারা এতে মোটামুটি একমত পোষণ করেছে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলাপ হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই ক্ষেত্রে আমাদের ফ্রিল্যান্সারদের কিভাবে সহযোগিতা করা যায়, এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কানাডার মন্ত্রী সজ্জন তার বাংলাদেশ সফরে ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে দেশটির গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমার এ সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল। কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে অনেক কিছু করার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাই।
জলবায়ু ইস্যুতে আগামী বছর কানাডা বাংলাদেশকে ১০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সহযোগিতা করবে বলে জানান হারজিত। তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যে ক্ষতির শিকার হচ্ছে সে বিষয়ে কানাডা ওয়াকিবহাল রয়েছে।
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      