 
              প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৩, ০৩:২৬ এএম
-20230816152623.jpg) 
                 ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের এখনই সদস্য পদ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। এরজন্য হয়তো আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
বুধবার (১৬ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন ব্রিকসের সম্মেলনে যোগ দিতে। এরইমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রশ্ন উঠেছে যে বাংলাদেশ এবার সদস্যপদ পাবে না। নতুন সদস্য নেয়ার ক্ষেত্রে ব্রাজিল ও ভারত কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারত যেহেতু প্রতিবেশী দেশ। বাংলাদেশ তাদের কাছে কোনো অনুরোধ করবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখনই সদস্যপদ না পাওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট দেখা করেছিলেন। তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনি আমন্ত্রণ জানান। তখন ধারণা ছিল, তারা নতুন কিছু দেশকে ব্রিকসের সদস্য করবেন। তখন বলেছিলেন, আমরা আরও আটটি দেশকে সদস্য হিসেবে নিতে চাই, যারা শক্তিশালী অর্থনীতির। তখন আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, কারা? তিনি তখন বলেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ইত্যাদি। আমরা চিন্তা করেছিলাম, আর আমরা তো ব্রিকস ব্যাংকে যোগ দিয়েছি। আমরা তো একটি উদীয়মান রাষ্ট্র। আমাদের জিডিপিও অনেক বেশি—ফোর হান্ড্রেড সিক্সটি ফাইভ বিলিয়ন ডলার। যা দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে বেশি,’ যোগ করেন তিনি।
সদস্যপদ বিষয়ে জটিলতার কথা তুলে ধরে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সদস্যপদ দেবে কি না এটা ব্রিকসের সিদ্ধান্ত। তাদের তিনটি দেশ নতুন সদস্য নিতে চাইছে। আর ভারত ও ব্রাজিল বলছে, আগে নেয়ার একটি নিয়মকানুন তৈরি হোক, তারপর নেয়া হোক। এটি তাদের বিতর্ক, আমাদের না। যখন নেয় নেবে।’
ভারত প্রতিবেশী দেশ, তাদের প্রতি এ বিষয়ে কোনো অনুরোধ থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকদিনের মধ্যেতো ভারত যাচ্ছি। আরও অন্যান্য দেশেও যাচ্ছি, তখন দেখা হবে। দেখা তো হবেই বটে। বিশেষ কোনো আয়োজন আমরা সেখানে করবো, নাকি ভারতে করা হবে, সেটা আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
তবে ব্রিকসের প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার বিষয়টিকে অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের একটি অপেনিং (শুরু) হতে পারে। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রেসিডেন্টকে বললেন যে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ আছে নেলসন ম্যান্ডেলার কারণে। তখন প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার করেছিলেন যে দক্ষিণ আফ্রিকা যাবেন। সে কারণেই দেশটিতে যাওয়া। আর এখনতো নতুন ডেভলপমেন্ট (পরিস্থিতি) হয়েছে। শুনেছি প্রায় ৭০টি দেশের প্রতিনিধি আসবেন। আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় সবাই আসবেন। আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে এখনো আমাদের সম্পর্ক জোরালো হয়নি। ইট ইজ অ্যা রাইজিং স্টার। আমরা এ সুযোগে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবো।’
আব্দুল মোমেন বলেন, আপনারা জানেন আফ্রিকায় আমাদের মিশনও ছিল না। আমি আসার পর দুটি মিশন করেছি। আরও খোলার চেষ্টা চলছে। আর আমাদের ওখানের রাষ্ট্রদূতেরাও আলাদা হয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে গেলে তাদের নির্দেশনা দিলে তারা আরও উদ্দীপ্ত হবে। আর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সম্প্রতি মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানায়, ব্রিকস জোটের সম্প্রসারণ চায় চীনসহ অন্য আরও দুটি দেশ। তবে এতে বাধ সেধেছে জোটের অন্যতম দুই সদস্য ভারত ও ব্রাজিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোট সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানসবার্গে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ব্রিকস-এর শীর্ষ সম্মেলনের আগে একাধিক প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে চীন জোটের সম্প্রসারণের বিষয়ে জোর আরোপ করেছে। কিন্তু ভারত এবং ব্রাজিলের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে বারবার আপত্তি তোলা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা জানান, চীন ব্রিকস জোটে ইন্দোনেশিয়া এবং সৌদি আরবকে ভুক্ত করার বিষয়ে বারবার চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু ব্রাজিল এবং ভারত চীনের চাপের সামনে মাথা নত করেনি।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভয় হলো, জোটের সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে তারা পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাব হ্রাস করার প্রচেষ্টা চালাতে পারে। ব্রাজিল পশ্চিমা বিশ্বের এই অবস্থানকে আমলে নিয়েই তড়িঘড়ি জোটের সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে। আর ভারত চায় কোনো দেশের জোটভুক্ত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়মনীতি থাকা এবং আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই একটি দেশ জোটের সদস্য হোক।
তবে এসব বিষয়ে আগস্টের ২২ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলনেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      