 
              প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৪, ১১:২৪ পিএম
 
                 
                            
              উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। এ সময় রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির কারণে বাজার থেকে টাকা উঠে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। ফলে বেশির ভাগ ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে। এর মধ্যেই ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকেই বেশি নজর দিচ্ছে সরকার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। আর সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যদিও এখন সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ ঋণাত্মক রয়েছে।
আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবারের বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে বৈদেশিক উৎস থেকে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা সংস্থান করা হবে। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ টাকা।
সরকার চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাস পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার চেয়ে পরিশোধ করছিল বেশি। তবে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ পাওয়া, আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এখন ঋণ দ্রুত বাড়ছে।
গত ২৯ মে পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার নিয়েছে ৬১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। আবার চলতি অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল সরকার। তবে ঋণ বৃদ্ধি দূরে থাক, উলটো গত মার্চ পর্যন্ত কমেছে ১২ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। এরপরও সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ৭ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, সুদ পরিশোধের বোঝা কমাতে বাজেটে সঞ্চয়পত্রের নির্ভরতা কমিয়েছে সরকার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা ঠিক করেছে সরকার। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য ঠিক করা ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা; যদিও সংশোধিত বাজেটে এ অঙ্ক কমিয়ে ৭ হাজার ৩১০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় নতুন অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরবহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      