• ঢাকা বুধবার
    ০৪ জুন, ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বকেয়া বেতন দাবিতে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ, পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে আহত ৫০

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম

বকেয়া বেতন দাবিতে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ, পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে আহত ৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও হেমায়েতপুর-সিংগাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেছে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সোমবার সকাল ৯টার দিকে হেমায়েতপুর এলাকার বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে দুপুর ১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয় তারা।

বেলা ৩টার দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়ে ও জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। পরে শ্রমিকদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এতে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে।

মহাসড়ক ছেড়ে দিলেও বর্তমানে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রেখেছে শ্রমিকরা।

শিল্প পুলিশ জানায়, হেমায়েতপুরে অবস্থিত বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেডে ৯৫০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করেন। কিছুদিন ধরেই কারখানাটিতে চলছিল শ্রমিক অসন্তোষ। তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না শ্রমিকরা। মালিকপক্ষ কয়েকবার তারিখ নির্ধারণ করলেও বেতন দিতে পারেনি। বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছেন শ্রমিকরা।

সাভার শিল্প পুলিশের এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আজ শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।’ সংঘর্ষে তিন নারীসহ ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

পুলিশ জানায়, বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা সকাল থেকেই বিক্ষোভ করছে। সকাল ৯টার দিকে তারা হেমায়েতপুর-সিংগাইর আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নেয়। এতে সড়কটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়ে সড়কটি ব্যবহারকারীরা।

দুপুর ১টার দিকে শ্রমিকদের একটি অংশ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এতে মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ৩টার দিকে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর কাঁদনে গ্যাস ও গরম পানি ঢেলে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পরে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয় শ্রমিকরা।

জানা গেছে, শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে (৬৮)‌ রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে ধরে এনে নিজেদের হেফাজতে নেয়। এ সময় শ্রমিকদের বকেয়া গতকাল রোববার পরিশোধ করা হবে বলে মুচলেকা দেন তিনি। তবে থানা থেকে বের হয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি রাখেননি।

শ্রমিক ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে মালিকপক্ষ বারবার কারখানা লে-অফ ঘোষণা করছে। সর্বশেষ ১৭ মে দেওয়া এক নোটিশে ১৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত লে-অফ ঘোষণা করা হয়। সেই নোটিশ অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের বেতন গত ২৫ মে দুপুর ৩টায় পরিশোধের কথা ছিল। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ গত ২৯ মে পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে জানায় মালিক পক্ষ। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি তারা। আজ আমরা আন্দোলন শুরু করলে পুলিশ আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।’

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ