
প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম
রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। প্রতীক চূড়ান্ত হলে দলটিকে নিবন্ধন সনদ দেয়া হবে। কিন্তু প্রতীক ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থানে এনসিপি ও নির্বাচন কমিশন।
দলের প্রতীক হিসেবে শুরু থেকেই শাপলা চেয়ে আসছে এনসিপি। তবে, ইসির গেজেটে থাকা ৫০ প্রতীকের তালিকায় শাপলা নেই। তাই নির্ধারিত প্রতীক থেকে একটি বেছে নেয়ার প্রস্তাব ইসি দিলেও শাপলা প্রতীকই চায় এনসিপি। ইসির চিঠির জবাবে শাপলার ৭টি নমুনাও জমা দিয়েছে নতুন দলটি।
এনসিপি যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, তারা (ইসি) কিন্তু আমাদেরকে বলেছিল, যে ১৫০টি মার্কা অন্তর্ভুক্ত হবে তার মধ্যে শাপলা থাকবে। এ কথা জানার পরেই কিন্তু আমরা তাদের বলেছিলাম নিবন্ধনের জন্য আমাদের দলের অনুকূলে এই প্রতীক সংরক্ষণ করা হোক। এরপরেই জুলাই পদযাত্রা….। তখন আমাদের সারাদেশে যারা শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থক আছে তারা খাল-বিল থেকে শাপলা নিয়ে জুলাই পদযাত্রায় এসেছে। এই মার্কার সাথে আমাদের একটা অর্গানিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ফলে আমাদের কাছে এই মার্কার কোনও বিকল্প নাই।
দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় প্রতীকে শাপলা যেমন আছে, তেমনি ধানের শীষ আছে, সেখানে পাটপাতা, তারকা রয়েছে, এমনকি যে গোলবৃত্ত সেটাও আসলে জাতীয় প্রতীকেরই একটা অংশ। যেহেতু জাতীয় প্রতীকের অংশের মধ্য থেকে তারকা একটা দলের প্রতীক, আবার ধানের শীষ আরেকটা দলের প্রতীক আছে, সেক্ষেত্রে শাপলা কোনও একটা দলকে প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ করতে কমিশনের কোনও বাধা থাকার কথা নয়।
তবে নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেয়ার পক্ষে। যদিও এ নিয়ে মন্তব্য করতে চায় না ইসি।
তবে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলি বলছেন, তালিকার বাইরে নতুন প্রতীক বরাদ্দে আইনি বাধা নেই ইসির।
তিনি বললেন, যদি এনসিপিকে শাপলা দিতে হয়, তাহলে বিধিমালায় একটা ছোট্ট সংশোধনী আনতে হবে। বিধিমালার তফসিলে শাপলা প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করা, এটা খুব একটা কঠিন কাজ না। এটা মূলত তাদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।
এ অবস্থায় এনসিপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, শাপলা না দিলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না বিবেচনা করবেন। আন্দোলনও করবেন।
আখতার হোসেন বলেছেন, আমাদের কাছে মনে হয় যে শাপলা প্রতীক বরাদ্ধ করতে কমিশনের সদিচ্ছার অভাব। এর সঙ্গে কোনোভাবে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে কি না, সে বিষয়েও আমাদের কাছে এখন ধারণার জায়গা তৈরি হচ্ছে। প্রতীক বরাদ্ধ না পাওয়ার কারণে যদি নির্বাচনকেন্দ্রীক কোনও আচল অবস্থার তৈরি হয়, সে দায়ভার সম্পূর্ণভাবে কমিশনকেই বহন করতে হবে।
সারোয়ার তুষার বলেন, প্রত্যেক ইস্যুতে আমাদেরকে যে অহেতুক ভোগান্তির মধ্যে তারা রাখছে, তা প্রমাণ করে যে ইসি চায় না এনসিপি নির্বাচনে আসুক। কিন্তু আমরা এটার জন্য ফাইট দিবো। যদি তারা এটা না দেয়, নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা করবো। আমরা এই প্রতীক ছাড়া নির্বাচনে যাবো না।
প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে ইসির ভূমিকার কারণে নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ হবে এ নিয়েও প্রশ্ন আছে, এনসিপির শীর্ষ নেতাদের।