
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
২০ শতাংশ বাড়িভাড়াসহ ৩ দফা দাবি আদায়ে ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন এমিপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষকরা। তবে দাবি আদায়ে তারা দুটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
আগামীকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বেলা ২টার মধ্যে দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে। পাশাপাশি রোববার (১৯ অক্টোবর) থেকে এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কর্মবিরতি শুরু করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টায় শহীদ মিনারে এই দুই কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।
তারা বলেন, আগামীকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বেলা ২টার মধ্যে দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলবে।
এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজীজি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে এবং বিকাল ৫টার মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করা হবে। সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরারের সঙ্গে আলোচনা শেষে এসব কথা বলেন তিনি। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আলোচনায় অংশ নেন।
দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্থার চাপে বৈঠকের নামে আইওয়াশ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার (সি আর আবরার), এটা শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন।
অধ্যক্ষ দেলাওয়ার বলেন, ওনারা আলোচনার নামে আই-ওয়াশ করেছেন। আমরা শিক্ষা উপদেষ্টাকে বলেছি, আমাদের ডাল-ভাতের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু উনি তার বক্তব্যে অনড়। বলেছেন, এর বাইরে তিনি পারবেন না। আমরা বলেছি, এখন ১০ শতাংশ দেবেন, পররবর্তী বাজেটে ১০ শতাংশ দেবেন। পুরো বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাজেটের আগে কয়েক দফায় আমরা চিঠি দিয়েছি, যেন আমাদের শিক্ষকদের বিষয়গুলো দেখা হয়। যে আবেদনে বাড়ি ভাড়া, টিফিন ভাতা, উৎসব ভাতাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৩ আগস্টের মধ্যে যদি আমাদের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা না হয়, তবে আন্দোলনে যাওয়া কথাও ছিল। ১১ আগস্ট এনএসআইয়ের পক্ষ থেকে আমাকে ফোন করে বলা হয়, আপনাদের বাড়ি ভাড়া যেন ২ হাজার করা হয়। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়, তখন একই বিষয় আমাদের জানানো হয়; যা আমরা প্রত্যাখ্যান করে শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া চাই।
এদিকে আজ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ কিংবা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষকরা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ি ভাড়ার দাবি তুলেছেন। তবে সরকার সামর্থ্য অনুসারে ৫ শতাংশ এবং ন্যূনতম ২০০০ টাকা সুপারিশ করছে এখন। নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশে সরকার আগামী বছর শিক্ষকদের আরও সম্মানজনক কাঠামো দিতে সচেষ্ট হবে।’
এদিকে টানা পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন করেন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন তারা। একই সঙ্গে সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে কর্মবিরতিও।