
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ১০:১২ পিএম
ভারতশাসিত কাশ্মীরের জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশের জম্মু শহর ব্ল্যাকআউট এবং সাইরেনের শব্দ শোনার খবর জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির
জম্মু শহরের গুজ্জর নগর সেতুর কাছে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, তিনি জম্মু বিমানবন্দরের কাছে ১৬টি বস্তু পড়ে রয়েছে বলে গণনা করেছেন।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করেছে। এতে ১৫ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে একটি নিরাপত্তা সূত্র বিমান বন্দরে বিস্ফোরণের খবর জানিয়েছে।
ওই প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, ওই সময় বাজার বন্ধ ছিল এবং তারা লোকজনকে দৌঁড়াদৌড়ি করতে দেখেছেন। তখন সাইরেন বাজছিল এবং গোটা শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, জম্মুতে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। এ সময় শহরজুড়ে এয়ার সাইরেন বাজছিল।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ৭ ও ৮ মে রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করতে চায়। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলান্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই, ভুজসহ ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর অনেকগুলো স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান। সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখন সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এদিকে ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইএসপিআর মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো পাকিস্তানের লাহোর, গুজরানওয়ালা, চকওয়াল, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, ছোড় এবং করাচির দিকে পাঠানো হয়েছিল।
গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।