
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দল জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। আমরা বলতে চাই, যারা এনসিসি গঠনের বিপক্ষে, তারা মূলত ফ্যাসিবাদী কাঠামোয় থেকে যেতে চান।
তিনি বলেন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন না হলে গণঅভ্যুত্থান ও সংস্কার কমিশন ব্যর্থ হবে।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
যারা এনসিসি গঠনের বিরোধিতা করছেন, তাদের বিকল্প প্রস্তাব পেশ করার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিয়ে ব্যাপক বিরোধিতা দেখিয়েছিল এবং ভবিষ্যতে তারা ক্ষমতায় গেলে এ বিষয়গুলো সংস্কার করবে বলেও প্রস্তাবনা রেখেছিল।
তিনি বলেন, কিন্তু এখন মনে হয়েছে কয়েকটি দল এনসিসি গঠনের বিষয়ে বিরোধিতা করেছেন। আমরা জানতে চাই, আপনারা কি আগের ফ্যাসিবাদী কাঠামোয় থেকে যেতে চান? মানবাধিকার কমিশন থাকার পরও বিগত ১৬ বছরে তারা কোনো কথা বলেনি। দুদক ও ইসি তাদের কার্যক্রমে বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়। কারণ তারা একটি দল ও ব্যক্তির আজ্ঞাবহে পরিণত হয়েছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে এনসিসি গঠনের বিষয়ে মতামত দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এনসিসি গঠনকে ক্ষমতার ভারসাম্য হিসেবে উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, নির্বাহী বিভাগের অসম ক্ষমতা হ্রাস করতেই আমাদের নতুন বাংলাদেশের যাত্রা। তাই আমরা এনসিসি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছি। তবে এখানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। পাশাপাশি এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে রাখা উচিত নয়। এটা নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রশ্ন রেখেছিলাম দুদক, ইসি, মানবাধিকার কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ কমিশনগুলো বিগত সময়ে দলীয়করণ হয়েছে এবং বিরোধী দল-মত দমনে ও ভোটাধিকার হরণেও তারা ভূমিকা রেখেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণের উপায় হিসেবে সংস্কার কমিশন প্রস্তাবনা করেছে একটা এনসিসি বা কাউন্সিল প্রয়োজন। যেখানে নিরপেক্ষতা ও আস্থার ভিত্তিতে আমরা নিয়োগগুলো করতে পারবো।
ঐকমত্য কমিশনের সভা হতাশার উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, সার্বিকভাবে আজকের দিনটা হতাশার। আমরা আশা করছিলাম এনসিসির বিষয়ে নীতিগত ঐক্যে আমরা আসতে পারবো যাতে করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঐকমত্য আস্থার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও নিয়োগ হবে। একদলীয়ভাবে আগের মতো প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী নিয়োগ হবে না। কিন্তু সেই ঐকমত্য হয়নি। এনসিসি গঠন না হলে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো আগের নিয়মে চলবে বলে শঙ্কা ও সংশয় তৈরি হয়েছে।