• ঢাকা রবিবার
    ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
শারদীয় দুর্গোৎসব

মহাষ্টমীতে চলছে কুমারী পূজা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৩, ০৩:৫৫ পিএম

মহাষ্টমীতে চলছে কুমারী পূজা

ছবি: সংগ্রহীত

সিটি নিউজ ডেস্ক

শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ মহাষ্টমী। দেশের বিভিন্ন স্থানে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পূর্জা অর্চনা। এরপরই শুরু হবে কুমারী পূজা। এদিন সর্বকামনা সিদ্ধির জন্য ব্রাহ্মণ কন্যাকে কুমারী হিসেবে পূজা করা হয় দেবী দুর্গার অঙ্গরূপে।পূজার আগে কুমারীকে স্নান করিয়ে পরানো হয় নতুন কাপড়। হাতে দেয়া হয় ফুল, কপালে সিঁদুরের তিলক, আর পায়ে আলতা। এরপর সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপচারে পূজা করা হবে কুমারী মাকে। চারদিক মুখরিত শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মায়ের স্তব-স্তুতিতে। এ পূজা দেখতে সকাল থেকেই মণ্ডপে ভিড় করছেন হাজার হাজার পূণ্যার্থী। ভক্তদের কষ্ট দূর করতে এ বছর দেবী দুর্গা এসেছেন ঘোড়ায় চড়ে। আর বিজয়া দশমীর দিনে একই বাহনে ছেড়ে যাবেন মর্ত্যলোক।

 

মহাষ্টমীতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপূজার বিশেষ পর্ব এ ‘কুমারী পূজা’। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থান এবং সারাদেশে আজ পূজামণ্ডপগুলোতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেবী দুর্গার কুমারী রূপের নাম ‘উমা’। সনাতন শাস্ত্রমতে, মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগৎমাতার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদনই কুমারী পূজা। এ পূজার মাধ্যমে নারী হয়ে উঠবে পবিত্র ও মাতৃভাবাপন্ন। প্রত্যেকে নারীর প্রতি হবে শ্রদ্ধাশীল।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, কুমারী কন্যার পূজা একাধারে সৃষ্টিকর্তার উপাসনা, মানবের বন্দনা আর পৃথিবীতে নারীর মর্যাদার প্রতিষ্ঠা। নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর সৃষ্টিকর্তার আরাধনাই কুমারী পূজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা।

শারদীয় দুর্গোৎসবের তৃতীয় দিনে আজ রোববার (২২ অক্টোবর) রাজধানীসহ সারাদেশে পূজামণ্ডপগুলোতে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পূজা-অর্চনা করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। গতকাল শনিবার ছিল মহাসপ্তমী। ওইদিন ভক্তরা দেবীর দিনভর পূজামণ্ডপগুলোতে আনন্দে মাতে।

জানা গেছে, মহাষ্টমীতে রোববার সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে কুমারী পূজা। পূজার চারদিনের মধ্যে মহাষ্টমীর অঞ্জলি ও কুমারী পূজা সর্বাধিক তাৎপর্যপূর্ণ। মহাষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এবং সকাল ৯টায় শুরু হবে কুমারী পূজা। এদিন কুমারী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করবেন পুণ্যার্থীরা।

১৬টি উপকরণ দিয়ে মহাষ্টমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস—এই পাঁচ উপকরণে দেয়া হয় ‘কুমারী’ মায়ের পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হবে পুষ্পমাল্য। কুমারী পূজা শেষে ভক্তরা মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দেবেন।

জানা যায়, ১৯০১ সালে ধর্মপ্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মঠে কুমারী পূজার মাধ্যমে এর প্রচলন করেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এ পূজা চলে আসছে। পূজার আগ পর্যন্ত কুমারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়। এছাড়া নির্বাচিত কুমারী পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে। শাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের সুলক্ষণা কুমারীকে পূজা করা হয়।

কুমারী পূজা ছাড়াও আজ মহাষ্টমীতে রাজধানীর শাঁখারী বাজার, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালী মন্দিরসহ সারাদেশে বিভিন্ন মন্দিরে বেলা একটা থেকে দিনভর ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। মন্দির ও মণ্ডপগুলোতেও পূজা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হবে।

 

সাজেদ/

আর্কাইভ