প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১, ০৬:০৮ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ের
পীরগঞ্জে এক গ্রামপুলিশের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগের পর আতঙ্কে দিন
পার করছে অভিযোগকারী পরিবার। গ্রামপুলিশ কাইয়ুম আলীর ভয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্য
জায়গায় রাত কাটাচ্ছে পরিবারটি।
লিখিত অভিযোগে
জানা যায়, উপজেলার কোষারানীগঞ্জ ইউনিয়নের ভামদা গ্রামের
কাইয়ুম আলী নামে এক গ্রামপুলিশ দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার ২৩ বছর বয়সী এক হিন্দু
গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্কের জন্য কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। প্রস্তাবে রাজি না হলে
ওই গৃহবধূর ক্ষতি করবেন বলে হুমকিও দেন গ্রামপুলিশ কাইয়ুম।
গত ৭ অক্টোবর
রাত ১১টার দিকে ওই গৃহবধূর স্বামীর অনুপস্থিতি টের পেয়ে সুকৌশলে তার শয়নঘরের
দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন গ্রামপুলিশ কাইয়ুম আলী। তিনি এ সময় ঘুমন্ত গৃহবধূকে
ধর্ষণের চেষ্টা চালান। তখন গৃহবধূ চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকলে কাইয়ুম আলী ঘর থেকে
বেরিয়ে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে এ ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই
গৃহবধূ।
থানায় লিখিত
অভিযোগের পর থেকেই গ্রামপুলিশ কাইয়ুম আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা নানা হুমকি ও
ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই হিন্দু পরিবারটির। তাদের ভয়ে আতঙ্কিত
হয়ে দিনে বাড়িতে থাকলেও রাতে প্রাণভয়ে অন্য জায়গায় রাত যাপন করছে ভুক্তভোগী
পরিবারটি। ঘটনার ৬ দিন পার হলেও বিচার না পেয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।
ভুক্তভোগী ওই
নারীর স্বামী বলেন, ‘গত ৭ অক্টোবর রাত ১০টার পর আমি বাড়ির পাশে
দোকানে যাই। আমার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে গ্রামপুলিশ কাইয়ুম এ ঘটনা ঘটায়। আমরা
এখানে দুইটি মাত্র হিন্দু পরিবার বসবাস করি। গ্রামপুলিশ কাইয়ুমের ভয়ে বাড়িতেও
থাকতে পারছি না। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
স্থানীয়রা জানান,
কাইয়ুম
আলী এর আগেও গ্রামপুলিশের পোশাক পরিধান করে রাতের আঁধারে বিভিন্ন সময় একাধিকবার
এ ধরনের ঘটনার চেষ্টা চালিয়েছেন। তার অত্যাচারে এলাকাও ছেড়েছে এক হিন্দু পরিবার।
স্থানীয়দের
অভিযোগ, গ্রামপুলিশের প্রভাব দেখিয়ে এলাকায় বিভিন্ন
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন কাইয়ুম আলী। ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও
চায় না।
ধর্ষণ চেষ্টার
বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে গ্রামপুলিশ কাইয়ুম আলী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে
স্থানীয়রা মিথ্যা ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এ ধরনের কোনো কাজে আমি
জড়িত না।’
বিষয়টি
স্থানীয়ভাবে ইউনিয়ন পরিষদে মীমাংসার জন্য বসা হলে কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান
কোষারানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা আলম। তিনি বলেন, ‘গ্রামপুলিশ কাইয়ুম তার অপরাধের কথা স্বীকার না করায় বিষয়টির সমাধান হয়নি।’
পীরগঞ্জ থানার
ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ
পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এস/এম. জামান