• ঢাকা রবিবার
    ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনায় পাওয়া নারীর দ্বিখন্ডিত লাশের পরিচয় মিলেছে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২২, ০৩:৪৭ এএম

খুলনায় পাওয়া নারীর দ্বিখন্ডিত লাশের পরিচয় মিলেছে

সিটি নিউজ ডেস্ক

খুলনায় পাওয়া নারীর দ্বিখন্ডিত লাশের পরিচয় মিলেছে (পাঁচ দিনের পরিচয়ে শারীরিক সম্পর্ক। এরপর শ্বাসরোধে হত্যা। কথিত স্ত্রীসহ প্রেমিক বক্কর গ্রেপ্তার) খুলনা প্রতিনিধি: মাত্র ৫ দিনের পরিচয়। এরপর শারীরিক সম্পর্ক। তারপর কথা কাটাকাটি। এর এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা। 

জানা গেছে, লাশ গুমের জন্য ঘরের বটি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে আবু বক্কর। ওই ঘটনায় নিজেকে আড়াল করতে আবু বক্কার কথিত স্ত্রী স্বপ্না বেগমকে নিয়ে রওনা হয় ঢাকার উদ্দেশ্যে। গ্রেপ্তার ভয়ে তারা অবস্থান নেয় গাজীপুরে। সর্বশেষ ঘটনার পর রোববার (০৬ নভেম্বর) রাতেই র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারীতে এসে গ্রেপ্তার হয় আবু বক্কর। একইসঙ্গে আটক হয় তার কথিত স্ত্রী স্বপ্না। র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকান্ডের বিবরণ দিয়েছে আবু বক্কর। পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক নগরীর গোবরচাকা এলাকার একটি সরু স্থান থেকে ভিকটিমের লাশের বিছিন্ন হওয়া দু’হাতের কবজি উদ্ধার করে র‌্যাব । 

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিহত ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে র‌্যাব। উদ্ধার হওয়া ওই নারী সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার কুতের বিল এলাকার জনৈক কালিপদ বাছাড়ের মেয়ে কবিতা রানী (২৯)। সোমবার (০৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় ঘটনাস্থলের পাশে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৬ এর মূখপাত্র লে: কর্ণেল মোসতাক আহমদ সাংবাদিকদের এ হত্যাকন্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আবু বক্কর তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে ১ নং গোবরচাকা ক্রসরোডের জনৈক রাজুর বাড়িতে প্রায় ৩ বছর যাবত বসবাস করছে। স্বপ্না তার বিবাহিত স্ত্রী নন। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাড়িতে তারা বসবাস করছে। স্বপ্না নগরীর প্রিন্স হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

এদিকে মাত্র ৫ দিন পূর্বে ভিকটিম ও আবু বক্করের মধ্যে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রে তাদের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। এক সময়ে আসামি বক্কর ভিকটিমকে তার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসে। ওই রাতেই তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় আসামি বক্কর ভিকটিম কবিতাকে গলা নামিয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু কবিতা সেটি না করে আরও উচু স্বরে কথা বলতে থাকে। উপায়োন্তুর না পেয়ে আবু বক্কর তাকে শ্বাসরোধ করার জন্য নাক ও মুখ চেপে ধরে। পরে নিস্তেজ হয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করে। লাশটি গুম করতে রান্নাঘর থেকে বটি এনে মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। এরপর মাথা পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখে। পরে দু’হাতের কবজি কেটে ফেলে ও দেহের বাকী অংশ একটি বক্সে ঢুকিয়ে রাখে। এরপর ওই রাতেই নিজেকে গোপন করতে আবু বক্কর তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে রূপসা নদী পার হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সে সময়ে আসামি স্বপ্নাকে হত্যাকান্ডের বিষয়ে কোন কথা জানায়নি। 

ঘটনার পর পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রোববার রাতেই আসামি আবু বক্করের অবস্থান নিশ্চিত করে তাকে ও তার কথিত স্ত্রীকে গাজীপুর জেলার বাসন থানাধীন চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে সোনাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা মহানগরীর ১নং গোবরচাকা ক্রস রোডস্থ তেতুল তলার একটি ভাড়া বাসা থেকে ওই নারীর দ্বিখন্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সর্বশেষ গ্রেপ্তারের পর আসামির স্বীকারোক্তি মোতাবেক নগরীর গোবরচাকা এলাকার একটি সরু স্থান থেকে লাশের বিছিন্ন হওয়া দু’হাতের কবজি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। 

 

এবি/এসএই

আর্কাইভ