• ঢাকা সোমবার
    ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ফের ভোটগ্রহণ শুরু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩, ০৫:২২ পিএম

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ফের ভোটগ্রহণ শুরু

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

নানা অনিয়মের কারণে বন্ধ ঘোষিত গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে আসনটিতে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় এ ভোট শুরু হয়, যা বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্র ও কক্ষে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।

এর আগে, মঙ্গলবার সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয় ইভিএমসহ নির্বাচনী সকল সরঞ্জাম। ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে এসব সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বুধবার সকাল থেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন ভোটাররা। তবে ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল সকাল ভোটারদের উপস্থিতি একেবারে কম ছিল। ভোট শুরুর পর ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া এমএইউ একাডেমি কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি তেমন লক্ষ্য করা যায়নি।

গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রে এসব ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

সুষ্ঠভাবে ভোটগ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম।

তিনি জানান, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যের নিরাপত্তার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা। যা পর্যবেক্ষণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচনে যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কথা জানিয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ করতে মাঠে রয়েছে বিজিবি, র‍্যাবের মোবাইল টিম, পুলিশের মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ‘

এই নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান রিপন (নৌকা) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী (জাপা) এএইচএম গোলাম শহিদ রঞ্জু (লাঙ্গল)। ভোটের মাঠে প্রচারণায় দেখা যায়নি বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানকে (ট্রাক)। গত ২৫ ডিসেম্বর অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) গত ২৫ ডিসেম্বর বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

গাইবান্ধা-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আসনটিতে ১২ অক্টোবর উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে প্রথমে গোপন কক্ষে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করায় ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং সাঘাটা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে দফায় দফায় ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে ইসি।

অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ৫১টি ভোটকেন্দ্রের ঘটনা তদন্ত করে গত ২৭ অক্টোবর ইসিকে প্রতিবেদন দেয়। পরে বাকি ৯৪টি ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ছিল কি না, তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় ইসি। ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কমিটি ওই প্রতিবেদন জমা দেয়।

তদন্তে দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের পাঁচ উপ-পরিদর্শক (এসআই), ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাসহ ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ আইন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

তদন্ত শেষে গত ৬ নভেম্বর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আগামী ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা দেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।


এএল/

আর্কাইভ