 
              প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম
 
                 
                            
              পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার পাশাপাশি জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার বক্তব্য প্রদান সহ বিভিন্ন অভিযোগে হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ (ওবায়দুল হক) নামে দুই সমন্বয়ককে বহিষ্কার করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী, সদস্য মো.আকিব ও মো. মনজিল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নিজস্ব আইডি পোষ্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত ওই দুই সমন্বয়ক জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পঞ্চগড় জেলা থেকে জানানো যাচ্ছে যে, তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ। কিন্তু ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে, তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে নানান ধরনের শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েন। সেই সাথে জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার বক্তব্য প্রদান করেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের কাজকে কোনো ভাবেই সমর্থন করে না। তাই শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পঞ্চগড় জেলার পক্ষ থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হলো। পরবর্তী সময়ে, তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কার্যক্রমে অংশ্রহণ করতে পারবেন না।
অভিযোগ তুলে বহিষ্কারের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন অফিসে গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। তার প্রতিবাদ করায় আমাদের গুপ্ত সংগঠন ও শিবির বলে অপ্রচার চালাচ্ছে। কয়েকদিন আগে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পথে কারণ ছাড়াই জেলার সমন্বয়ক সান ও আমাকে মারতে এসেছে। একই সাথে তারা আমাদের গুপ্ত সংগঠনের সদস্য বলে আখ্যা করছে। তাদের এমন কর্মকান্ডে আমরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
ফজলে রাব্বী বলেন, আন্দোলনের তেঁতুলিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে আমরা সব সময় তাদের প্রাধান্য দিয়েছি। কিন্তু তারা নিজের সুনাম ধরে না রেখে কিছুদিন আগে শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উষ্কানি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একক সিদ্ধান্তে হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধনে ডাক দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করেন। প্রচারের কিছুক্ষণ পরই তেঁতুলিয়ায় জুলাই আগষ্ট আন্দোলনে যুক্ত থাকা সমন্বয়ক, পঞ্চগড় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা সহ বিভিন্ন ব্যাক্তি তাদের একক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিরোধীতা ও তাদের কর্মসূচীতে যোগ না দেয়ার আহবান জানান। পরে রাতেই তাদের কর্মসূচী স্থগিত হয়। এই সুযোগে ইউএনওর নামের সাথে আমাদের যুক্ত করে অপপ্রচার চালানো শুরু করে তারা। যার কোন ভিত্তি না থাকায় এবং বিভিন্ন শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থাকায় আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা বহিষ্কার করি।
এদিকে অভিযুক্ত হযরত আলী ও ওবায়দুল্লা বলছেন, সারাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা নিজেদের জায়গা থেকে সবার মত আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা কারো বাপের কথায় আন্দোলন করিনি। যে অভিযোগ তুলে আমাদের বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে সেটার কোন ভিত্তি নেই। কারণ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ে কোন কমিটি নেই। আর সে কারণে তিনি বহিষ্কার করতে পারেন না। আমরা যতদূর মনে করছি জানি সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী শিবির করেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বী বলেন, আমি কারো পক্ষে কাজ করি না। আমি জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে অনেকে অনেক ভাবে চাঁদা বাজির চেষ্টা করেছে, করে আসছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আমি সব সময় সোচ্ছার থাকায় আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠছে। বহিষ্কারের ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। বা আমি কারো সাথে যুক্ত না, শৃঙ্খলার বাইরে কোন কর্মকান্ডে জড়িত না। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে সেটার সত্যতা যাচাই করে দেখা আমাদের উচিত। আমরা গণতন্ত্র বাংলাদেশ সরকারের চাকরি করতে এসেছি, আমরা সরকারের নির্দেশনা মেনে কাজ করি। এখানে কারো সেল্টারের প্রয়োজন নেই। কারো ছত্রছায়ায় থেকে অপকর্ম করার প্রচেষ্টা করার কোন সুযোগ এই চাকরিতে নেই। যদি কারো অভিযোগ থাকে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করুক। আমি আমার অভিভাবক শ্রদ্ধেয় অভিভাক জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে কথা বলেছি। আমি স্যারকে বলেছে যদি কোন অভিযোগ থাকে সেটা তদন্ত হোক। তদন্ত হওয়ার পর সত্য প্রমাণিত হলে আমাকে শাস্তি দেয়া হোক। আর যদি তা না হয়, তাহলে এটাকে অপপ্রচার হিসেবে ধরে নেয়া হোক।
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      