
প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নে মব সৃষ্টি করে বাবা-মায়ের সামনেই মো. রিহান উদ্দিন মাহিন নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। চুরির অপবাদ দিয়ে মব সৃষ্টি করা হয় এবং ওই কিশোরকে হত্যা করা হয়।
এ সময় স্থানীয় সমবয়সি মানিক ও রাহাত নামের দুই কিশোরসহ মাহিনের পিতা লোকমান মারাত্মক আহত হন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোরে ইউনিয়নের সাকর আলী তালুকদার বাড়ির চেইঙ্গার ব্রিজ এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
নিহত মো. রিহান উদ্দিন মাহিন (১৫) ওই এলাকার মুহাম্মদ লোকমানের ছেলে।
ফটিকছড়ি থানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. নোমান ও আজাদ নামের দুই যুবককে আটক করেছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাহিন, মানিক ও রাহাত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সিএনজি অটোরিকশায় নিজ এলাকায় এলে সেখানে ওতপেতে থাকা একদল যুবক মাহিন ও তার বন্ধুদের ধাওয়া করে। তারা ধাওয়ার একপর্যায়ে পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে উঠে যায়। সেই ভবনে চুরির অপবাদে তাদের ধরে এনে চেইঙ্গার ব্রিজের উপর সকাল পর্যন্ত বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এ সময় মাহিনের বাবা ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে মাহিন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
নিহতের ফুফু সুখী বেগম বলেন, আমার ভাইপো আমার কাছে পানি চেয়েছে তারা সেটিও দিতে দেয়নি। তারা রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারতে মারতে তাকে হত্যা করেছে।
পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া ঘরের মালিক মোবারক জানান, আমাদের ঘরে কোনো চুরির ঘটনা ঘটেনি। লোকজনের চেঁচামেচি শুনে ঘুম ভাঙলে দেখি কয়েকজন কিশোরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের বলেন, চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তাকে মারা হয়; যদিও এটি আইনবহির্ভূত।
ফটিকছড়ি থানার ওসি নুর আহমদ জানান, ভোরে সাকর তালুকদার বাড়ির একটি সড়কের উপর মাহিনরা সিএনজিতে এলাকায় আসে। সেখানে ওতপেতে থাকা স্থানীয় কয়েকজন মাহিনসহ দুই কিশোরকে আঘাত করে। তারা তিনজন পালিয়ে একটি নির্মাণাধীন ঘরের ছাদের উপর উঠে আশ্রয় নেয়। পরে ধাওয়াকারীরা ওই তিনজনকে ছাদ থেকে নামিয়ে চেইঙ্গার ব্রিজের উপর নিয়ে পেটাতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই মাহিন নামের কিশোর মারা যায়। বাকি তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে, মামলা চলমান।