প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১, ১১:২৩ এএম
বাংলা সিনেমার ক্ষণজন্মা চিত্রনায়ক সালমান শাহ। নব্বই দশকে
সালমান শাহ ও শাবনূরকে
নিয়ে পত্রপত্রিকায় নানা রকম মুখরোচক
খবর প্রকাশিত হয়। শাবনূরকে কেন্দ্র
করে স্ত্রী সামিরার সঙ্গে তার ঝগড়াও কম
হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে
রাগ করে চট্টগ্রামেও চলে
গিয়েছিলেন সামিরা। মহাতারকা সালমান শাহর মৃত্যুর আগের
রাতে শাবনূরের সঙ্গে কী ঘটেছিল তা
জানিয়েছেন স্ত্রী সামিরা।
সামিরা
বলেন, ‘শাবনূর ইস্যুতে আমি একসময় রাগ
করে চট্টগ্রামে বাবার বাসায় চলে যাই। সেখানে
আড়াই মাস থাকার পর
ইমন (সালমান শাহর ডাক নাম)
আমাকে আনতে যায়। তখন
ইমনকে বলেছিলাম, শাবনূরের সঙ্গে সিনেমা করলে আমি তোমার
সঙ্গে যাব না। তোমার
সঙ্গে থাকব না। হয়
তুমি আমাকে ডির্ভোস দিয়ে দাও, না
হলে আমি তোমাকে ডির্ভোস
দিয়ে দিই। তখন ইমন
বলেছিল, না আমি তোমাকে
ছাড়া থাকব না। তুমি
আমার সঙ্গে চল। আমি শাবনূরের
সঙ্গে আর কোনো সিনেমা
করব না। যেসব সিনেমার
টাকা নিয়েছি সেগুলোর কাজ শেষ করে
আর নতুন কোনো সিনেমায়
শাবনূরকে নিয়ে কাজ করব
না। এ সিনেমাগুলোর শুটিংয়ের
সময় তুমি আমার সঙ্গে
থাকবে। ইমন যখন এভাবে
বলল, তখন আর আমি
রাগ করে থাকতে পারিনি।
আমি ইমনের সঙ্গে ঢাকা চলে আসি।’
মৃত্যুর
আগের দিন রাতেও ডাবিংয়ে
ব্যস্ত ছিলেন সালমান শাহ। সেদিন ডাবিং
সেটে বসেই স্ত্রীর সঙ্গে
সালমান শাহর মনমালিন্য তৈরি
হয়। সামিরা বলেন, ‘ডাবিংয়ের মধ্যেই শাবনূর বার বার ইমনের
সঙ্গে কানে কানে কথা
বলার চেষ্টা করছিল। সে ইমনকে চুমু
খাচ্ছিল, জড়িয়ে ধরছিল। এগুলো দেখে আমার ভালো
লাগেনি। বিষয়টি আমি আব্বাকে (সালমান
শাহর বাবা) প্রথমে জানাই। আব্বার সঙ্গে আমি খুব ফ্রি
ছিলাম। আমি তাকে বললাম,
আমি আর এক মুহূর্তও
এখানে থাকব না। ইমন
যখন দেখল আমি আর
আব্বা উঠে গেলাম, তখন
সে বুঝতে পেরেছিল আমি রাগ করেছি।
ইমন আমাদের পেছন পেছন আসছিল
আর বলছিল, কী হয়েছে? কী
হয়েছে? আমি আর কথা
না বাড়িয়ে ‘বাসায় যাব’ বলে গাড়িতে উঠে
বসি।’
পরিস্থিতি
বেগতিক দেখে সালমান শাহ
সঙ্গে নিয়ে যান পরিচালক
বাদলকে। তা জানিয়ে সামিরা
বলেন, ‘এ সময় ইমন
রেজা ভাইকে বলল, আমার শরীর
খারাপ লাগছে, ডাবিং প্যাকআপ করেন। ইমন শাবনূরের কাছ
থেকে বিদায় না নিয়েই আমাদের
সঙ্গে দ্রুত গাড়িতে উঠে। আমি কোনো
কারণে ভীষণ রেগে গিয়েছি
সেটা ইমন বুঝতে পেরেছিল।
গাড়িতে আমি বাঁ দিকে
বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে
ছিলাম। ইমন বার বার
বলছিল, “বাদল ভাই আমার
বউটা রাগ করে ফেলল!”
বাদল ভাই সান্ত্বনা দিয়ে
বলেছিলেন, “আরে না ঠিক
হয়ে যাবে; আমাদের লক্ষ্মী ভাবি।”’
সালমান
শাহ স্ত্রী সামিরার হাতে খেতে খুব
পছন্দ করতেন। সেদিন রাতেও বায়না ধরেছিলেন সামিরার হাতে খাওয়ার। প্রথমে
সামিরা খাওয়াতে রাজি হননি। যদিও
পরে সামিরা নিজ হাতে সালমান
শাহকে খাইয়ে দেন বলেও জানান
তিনি।
বাংলাদেশের
চলচ্চিত্রে ধূমকেতুর মতো আর্বিভাব ঘটেছিল
সালমান শাহর। মাত্র চার বছরে ২৭টি
সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতির শীর্ষে
পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতি তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই সালমান
শাহ ১৯৯৬ সালের ৬
সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন।
সবুজ/এএমকে