• ঢাকা শুক্রবার
    ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
‘দ্বীপের রানি

এই নারী দিন কাটান অপরাধীদের সঙ্গে, কেন এমন সিদ্ধান্ত তার?

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩, ০৯:৪৪ পিএম

এই নারী দিন কাটান অপরাধীদের সঙ্গে, কেন এমন সিদ্ধান্ত তার?

ছবিঃ সংগৃহীত

সাজেদ আল হাসান

এই দ্বীপে একমাত্র মহিলা তিনি। ঘুরতে গিয়ে সেখানে পাকাপাকি ভাবে থাকা শুরু করেন। পরে তিনিই হয়ে উঠলেন ‘দ্বীপের রানি’।

photo of Pianosa  island

জীবন যে কখন কাকে কোন দিকে নিয়ে যায়, তা আর কে বলতে পারে! এই যেমন ইটালির জিউলিয়া মানকার কথাই ধরা যাক। বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছুটির মেজাজে কয়েকটা দিন নিজের সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিলেন। আর সেই বেড়ানোর জায়গাতে গিয়েই এক মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে ফেললেন নিজেকে।

ছবি সংগৃহীত।

০২

photo of Giulia Manca

ইটালির পিয়ানোসা দ্বীপে কয়েক দিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছিলেন জিউলিয়া। সেই জায়গা তাঁর হৃদয়কে এতটাই নাড়িয়ে দিল যে, সেখান থেকে বাড়ি ফেরার কথা মাথা থেকেই বার করে দিলেন। তার পর থেকে সেখানেই পাকাপাকি ভাবে থাকা শুরু করলেন।

ছবি সংগৃহীত।

০৩

photo of Pianosa  island

ভূতুড়ে দ্বীপও বলা হয়ে থাকে এই পিয়ানোসাকে। জানলে আশ্চর্য হবেন যে, জিউলিয়াই একমাত্র মহিলা, যিনি ওই দ্বীপে রয়েছেন। অর্থাৎ, সেখানে আর কোনও মহিলা বাসিন্দা নেই।

ছবি সংগৃহীত।

০৪

photo of Pianosa  island

সেটা ২০১১। সে বছর নিজের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর জন্য পিয়ানোসাকে বেছে নিয়েছিলেন জিউলিয়া। পিয়ানোসা এমন একটা দ্বীপ, যেখানে অতীতে ইটালির বন্দিদের রাখা হত।

ছবি সংগৃহীত।

০৫

photo of Pianosa  island

ওই দ্বীপে একটাই মাত্র হোটেল রয়েছে। যার নাম ‘হোটেল মিলেনা’। ২০১১ সালে পিয়ানোসা গিয়ে ওই হোটেলেই উঠেছিলেন জিউলিয়া।

ছবি সংগৃহীত।

০৬

representative photo of prison

ওই হোটেলের সব কর্মীই দাগি অপরাধী। জেলের ওই আসামিরাই হোটেলের দেখভাল করেন। বন্দিদশা থেকে বেরিয়ে সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর প্রচেষ্টাতেই ওই হোটেলে আসামিদের নানা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চলে তাঁদের পুনর্বাসন কেন্দ্র।

প্রতীকী ছবি।

০৭

representative photo of prison

বেড়াতে গিয়ে এমন কাণ্ড দেখে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলেন জিউলিয়া। জীবনে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়া হয়েছে ওই অপরাধীদের। এই ভাবনাটা আকৃষ্ট করেছিল তাঁকে। আর তার পরই সেখানে পাকাপাকি ভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

০৮

photo of Pianosa  island

দেখতে দেখতে ১২ বছর হয়ে গেল। ওই দ্বীপ আর হোটেলেই এখন জিউলিয়ার সংসার। দ্বীপে যে দু’জন স্থায়ী বাসিন্দা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন হলেন জিউলিয়া। বেড়াতে গিয়ে যে হোটেলে উঠেছিলেন, সেই হোটেলেরই ম্যানেজার এখন জিউলিয়া।

ছবি সংগৃহীত।

০৯

photo of Pianosa  island

জিউলিয়া যখন অতিথি হিসাবে ওই হোটেলে ছিলেন, তদানীন্তন ম্যানেজার তাঁকে বলেছিলেন যে, হোটেল পরিচালনায় অর্থাভাব রয়েছে। ফলে অর্থাভাবে যে কোনও দিন বন্ধ হয়ে যেতে পারে হোটেল।

ছবি সংগৃহীত।

১০

photo of Pianosa  island

অর্থাভাবে যদি সত্যিই হোটেলটি বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে ওই আসামিদের আবার জেলে ফেরত যেতে হবে। এই হোটেলের দৌলতে সমাজে মূলস্রোতে ফেরার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা, তা ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। আর এটাই নাড়িয়ে দিয়েছিল জিউলিয়াকে।

ছবি সংগৃহীত।

১১

representative photo of prison

অতীতে ‘ট্যুরিস্ট এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করতেন জিউলিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘হোটেল ম্যানেজারের কথা শুনে আমার মনে হয়েছিল, কিছু একটা করতে হবে। তা না হলে তাঁরা (আসামি) আবার জেলের ছোট্ট কুঠুরিতে দিন কাটাবেন।’’

প্রতীকী ছবি।

১২

photo of Pianosa  island

এর পরই ইটালির টাসকানির বাসিন্দা জিউলিয়া ওই দ্বীপে পাকাপাকি ভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। পরে ওই হোটেলেরই ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। প্রথম দিকে কোনও পারিশ্রমিকও নিতেন না। তাঁর পরিচালনাতেই হোটেলের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হয়েছে।

ছবি সংগৃহীত।

১৩

representative photo of prison

ওই হোটেলে রয়েছেন এক জন কারারক্ষী। সেই সঙ্গে রয়েছেন ১০ জন পুরুষ। তাঁরা প্রত্যেকেই অপরাধী। হোটেলের যাবতীয় কাজকর্ম তাঁরাই সারেন। তাঁদের সঙ্গেই থাকেন জিউলিয়া।

প্রতীকী ছবি।

১৪

representative photo of kitchen

ওই অপরাধীদের মধ্যে কেউ রান্নাঘর সামলান। আবার কেউ হোটেলের বাগানের দায়িত্বে রয়েছেন। কারও উপর আবার খাবার পরিবেশনের ভার রয়েছে। কেউ আবার সাফাইয়ের কাজ করেন। এই কাজের জন্য তাঁরা পারিশ্রমিকও পান।

প্রতীকী ছবি।

১৫

photo of Pianosa  island

হোটেলে রয়েছে ১১টি ঘর। থরে থরে সাজানো রয়েছে কাঠের আসবাবপত্র। হোটেলের ঘর থেকে সমুদ্রের অপরূপ সৌন্দর্যের দর্শনও পাওয়া যায় ভাল। আসলে দ্বীপটাই এমন একটি জায়গায় রয়েছে, যার আশপাশে সমস্ত রূপরস ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি।

ছবি সংগৃহীত।

১৬

photo of Pianosa  island

চারদিকে পাইন গাছের সারি। সামনে রয়েছে সমুদ্র। হোটেলের বাইরে রয়েছে প্রাঙ্গণ। যেখানে বসার ব্যবস্থাও রয়েছে।

ছবি সংগৃহীত।

১৭

photo of Pianosa  island

হোটেলে অতিথিদের জন্য রয়েছে রেস্তরাঁ, পানশালাও। অনেকেই ছুটি কাটাতে ওই দ্বীপে ঘুরতে যান। আর একমাত্র আস্তানা হিসাবে ওঠেন ওই হোটেলে। জন্মদিন বা বিয়েবাড়ির পার্টিরও আয়োজন করা হয় সেখানে।

ছবি সংগৃহীত।

১৮

representative photo of prison

জিউলিয়াকে ‘পিয়ানোসার রানি’ও বলেন কেউ কেউ। হোটেল সামলানোর পাশাপাশি দ্বীপে আসামিদের জন্য যে পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে, তার তদারকিও করেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

১৯

photo of Pianosa  island

আসামিদের সঙ্গে থাকতে ভয় করে না? জিউলিয়ার কথায়, ‘‘অনেকেই বলেন আমি নাকি পাগল। তাই এমন কাজ করছি। কিন্তু আমি এখানে নিজেকে খুবই সুরক্ষিত মনে করি। কখনই আমার ভয় লাগেনি কিংবা দুশ্চিন্তাও হয়নি।’’

ছবি সংগৃহীত।

২০

photo of Pianosa  island

নিজের এই কাজের জন্য গর্বিত বোধ করেন জিউলিয়া। তাঁর কাজ নিয়ে প্রথমে ভয় পেত জিউলিয়ার কন্যা। পরে দ্বীপ ঘোরার পর সে-ও তাঁর মায়ের জন্য খুশি। আর তাই তো জিউলিয়া বলেছেন, ‘‘খুবই ভাগ্যবতী আমি।’’

ছবি সংগৃহীত।

 

 

সাজেদ/

আর্কাইভ