
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ০১:০০ পিএম
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর এবার বাস্তবিকই পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও। প্রতিশোধের নেশায় রীতিমতো ফুঁসছে তারা।
এরই মধ্যে ভারতকে কঠিন জবাব দিতে প্রয়োজনীয় যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির কাছ থেকে অনুমতিও পেয়ে গেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ভারতকে তার হামলার চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঙ্কার ছেড়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।
এ অবস্থায় ভারতের কোথায় এবং কোন স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে পাকিস্তান হামলা চালাবে তা স্পষ্ট করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে রয়টার্স।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ বলেছেন, ভারতীয় বেসামরিক জনগণ নয়, কেবল সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেই পাল্টা আঘাত হানবে পাকিস্তান।
এর আগে, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ভারত যে ভুল করেছে, তার চরম মূল্য দিতে হবে। তারা হয়তো ভেবেছে আমরা পিছু হটবো, কিন্তু তারা ভুলে গেছে—এটা সাহসী মানুষের জাতি। প্রতি ফোঁটা রক্তের চরম বদলা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে যা এখন।
গত মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে অন্তত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি করছে পাকিস্তান। দেশটির দাবি, ভারতের হামলায় ছয়টি স্থান লক্ষ্যবস্তু করা হয়। কিন্তু সেগুলোর কোনোটি ‘সন্ত্রাসী শিবির’ ছিল না। হামলার সময় পাকিস্তানের আকাশে ৫৭টি বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ ছিল, যেগুলোতে হাজারো যাত্রী ছিলেন—সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের উড়োজাহাজ ছিল এসবের মধ্যে।