প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
সাহিত্যিক, শিক্ষক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার আর নেই।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সিপিবির ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
বেশ কয়েক মাস ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন যতীন সরকার। এ ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলি আর্থ্রাইটিসে ভুগছিলেন। কয়েক মাস আগে বেশ কিছু কারণে তার শরীরে অস্ত্রোপচারও করা হয়। এরপর কিছুটা সুস্থ হলে নেত্রকোনায় নিজ বাড়িতে বসবাস করছিলেন তিনি।
যতীন সরকারের জন্ম নেত্রকোনার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে, ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট। ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগ শিক্ষকতা করতেন। সুদীর্ঘকাল ধরে মননশীল সাহিত্যচর্চা, বাম রাজনীতি এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তার প্রথম গ্রন্থ ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় ‘বাংলাদেশের কবিগান’, ‘বাঙালির সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য’, ‘সংস্কৃতির সংগ্রাম’, ‘মানবমন, মানবধর্ম ও সমাজবিপ্লব’। বাংলা একাডেমি থেকে ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত ‘গল্পে গল্পে ব্যাকরণ’ বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যে এবং ব্যাকরণ গ্রন্থের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। বাংলা একাডেমির জীবনী গ্রন্থমালার মধ্যে চারটি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আরও রয়েছে ‘পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন’, ‘দ্বিজাতিতত্ত্ব, নিয়তিবাদ ও বিজ্ঞান-চেতনা’, ‘সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী সমাচার’, ‘সাহিত্য নিয়ে নানাকথা’ ইত্যাদি।
যতীন সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক, ২০০৫ সালে ‘পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু দর্শন’ গ্রন্থের জন্য প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থপুরস্কার, ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার, মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেন।
