• ঢাকা বুধবার
    ১৪ মে, ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ১২:০৮ পিএম

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিষয়টি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র অবগত আছে জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (১৩ মে) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ মুখপাত্র টমি পিগট।

ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নকারী প্রশ্ন করেন—বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে তার সব রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে দলটির রাজনৈতিক পরিচয় কার্যত মুছে ফেলা হয়েছে এবং ভবিষ্যতের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথও রুদ্ধ করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, আগের এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি বাংলাদেশের সমন্বিত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য কী?

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র মাইকেল পিগট বলেন, আমরা জানি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে সবধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করেছে, যতক্ষণ না দলটির বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায় আসে। আমরা বাংলাদেশের কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। আমরা একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ন্যায়সঙ্গত এবং আইনি আচরণে বিশ্বাস করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশসহ সব দেশের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সব সংগঠনের স্বাধীনতাকে সম্মান করে।

পৃথক প্রশ্নে ওই প্রশ্নকারী বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেভাবে উগ্র মতাদর্শ ও সন্ত্রাসবাদ উসকে দিচ্ছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি কী? তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ সরকারের একজন উপদেষ্টার সঙ্গে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইয়্যেবা’র বৈঠক হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে কাশ্মীর ইস্যুতে সহিংসতা উসকে দেওয়া রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের সমর্থন বাড়ছে। এই বৈঠকটি বাংলাদেশ সরকারের একটি মন্ত্রণালয়ে হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

জবাবে মার্কিন মুখপাত্র বলেন, আমি আগের প্রশ্নের উত্তরেই একটি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছিলাম—সেটিই পুনরায় বলব। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ৫০ বছরের বেশি সময়ের অংশীদারিত্বকে মূল্য দিই। আমরা এই অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহী এবং এজন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গেও কাজ করে যাচ্ছি। আগের প্রশ্নে আমি যা বলেছি, সেটিই বলার মতো রয়েছে। এর বেশি কিছু যোগ করার নেই।

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, কোনো উপযুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ না করেই আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ একটি উদ্বেগজনক ঘটনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা যেভাবে খর্ব করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক পরিসর (পলিটিক্যাল স্পেস) সংকুচিত হয়ে আসছে তাতে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত স্বভাবতই উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে আমরা জোরালো সমর্থন জানাই।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১২ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। পরে একইদিন রাতে দলটির নিবন্ধনও স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আর্কাইভ