• ঢাকা শনিবার
    ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

গাজায় এখনো আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ইসরাইলের ‘বিস্ফোরক রোবট’

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১১:২৮ এএম

গাজায় এখনো আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ইসরাইলের ‘বিস্ফোরক রোবট’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর নিজ বাসস্থানে ফিরে আসছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা।  জাবালিয়া, শেখ রাদওয়ান, আবু ইস্কান্দারসহ বিভিন্ন এলাকায় যারা ফিরে গিয়েছেন তারা দেখছেন—ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও পড়ে আছে ইসরাইলের ‘বিস্ফোরক রোবট’, যেগুলোর অনেকগুলো এখনও ফাটেনি, নীরব ও মারাত্মক বিপজ্জনক অবস্থায় রয়ে গেছে। খবর আল জাজিরার।

২০২৪ সালের মে মাসে ইসরাইল প্রথমবারের মতো জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে এসব রোবট ব্যবহার করে। এরপর থেকে এগুলো উত্তর গাজায় এক ভয়ঙ্কর আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।

ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানায়, যুদ্ধবিরতির আগ পর্যন্ত ইসরাইল এসব রোবট ব্যবহারে ‘অভূতপূর্ব গতি’ অর্জন করেছিল—প্রতিদিন প্রায় ৩০০টি আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হচ্ছিল গাজা সিটি ও জাবালিয়ায়।

এই রোবটগুলো মূলত সাঁজোয়া যান, যেগুলোর ভেতর বিস্ফোরক ভর্তি করা হয়। এরপর সেগুলোকে সাঁজোয়া বুলডোজার দিয়ে টেনে নির্দিষ্ট এলাকায় নিয়ে গিয়ে দূরনিয়ন্ত্রণে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়—যা চারপাশের সবকিছু গুঁড়িয়ে দেয়।

গাজা সিটি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, এসব রোবটের ‘ধ্বংস পরিধি প্রায় ৫০০ মিটার’ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি ছিল ‘বিস্ময়কর মাত্রার’।

জাবালিয়ার ২২ বছর বয়সী শরিফ শাদি বলেন, ‘বিস্ফোরক রোবট যখন ঢোকে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো ব্লকটা ধ্বংস হয়ে যায়। শুধু ধ্বংসস্তূপ আর ধোঁয়া থাকে। ‘

শাদি স্মরণ করে বলেন, এক সকালে রাস্তায় থাকা অবস্থায় দেখেন একটি ডি১০ বুলডোজার একটি রোবট টেনে তাদের ব্লকের দিকে নিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমি দৌড় দিতে শুরু করি। ১০০ মিটার দূর যেতে না যেতেই বিশাল এক বিস্ফোরণে আমি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ি। যাঁরা কাছাকাছি ছিলেন, তাদের আর কোনো চিহ্নই ছিল না।’

ইউরো-মেড মনিটর তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, এসব রোবটের নির্বিচার ধ্বংসযজ্ঞ ‘নিষিদ্ধ অস্ত্রের শ্রেণিতে পড়ে’ এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এর ব্যবহার “যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ” হিসেবে গণ্য হয়।

তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এখনও এসব অস্ত্র ব্যবহারের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।

ফিলিস্তিনি মেডিকেল রিলিফ সোসাইটির পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু আফাশ জানান, বিস্ফোরণের পর এসব রোবট থেকে বিষাক্ত গ্যাস ও ভারী ধাতব ধোঁয়া নির্গত হয়, যা তীব্র শ্বাসকষ্ট ও বিষক্রিয়ার কারণ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মানুষের  বারবার শ্বাসরোধ, বুকে ব্যথা ও স্নায়বিক দুর্বলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।’

আর্কাইভ