প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২২, ১১:৪০ এএম
কিডনি
অকেজো হয়ে গেলে এর সর্বোত্তম চিকিৎসা হলো কিডনি সংযোজন বা প্রতিস্থাপন। কিডনি
সংযোজন হলো একজনের কিডনি নিয়ে আরেকজনের দেহে প্রতিস্থাপন করা। তবে একজন কিডনি
অকেজো হওয়া রোগী কাদের কাছ থেকে সুস্থ কিডনি নিতে পারবেন বা কারা তাকে কিডনি দান
করতে পারবেন?
হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী
শুধু রক্ত সম্পর্কের আত্মীয়ই নয়, মানবিক বিবেচনায় সহানুভূতিশীল হয়ে যে কেউ যে কাউকে কিডনি
দিতে পারবে। তবে মাদকাসক্ত ও কিডনি বেচাকেনা করে এমন কোনো ব্যক্তির কিডনি নেওয়া
যাবে না।
আইন বলছে, কিডনি রোগীর জীবন
রক্ষায় ২২ ধরনের আত্মীয় নিজের একটি কিডনি দিতে পারেন। তিন বছর আগে হাইকোর্টের এক
রায়ে কিডনিদাতার পরিধি বাড়াতে আইন পরিবর্তনসহ কিছু উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বলছেন,
স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয় আদালতের নির্দেশ শোনেনি।
মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
সংযোজন (সংশোধন) আইন, ২০১৮ অনুয়ায়ী
জীবন রক্ষায় নিকটাত্মীয়ের কিডনি নেওয়া যাবে। নিকটাত্মীয় হচ্ছেন—মা, বাবা, ছেলে, মেয়ে, ভাই, বোন, স্বামী, স্ত্রী ও আপন
চাচা, ফুফু, মামা, খালা, নানা, নানি, দাদা, দাদি, নাতি, নাতনি এবং আপন
চাচাতো, মামাতো, ফুফাতো, খালাতো ভাই বা
বোন। এই তালিকার বাইরে অন্য কারও শরীর থেকে কিডনি নিয়ে অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন
করার আইনি সুযোগ নেই।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার
উদয়পুর ইউনিয়নের বহুতি ও জয়পুর বহুতি পাশাপাশি ছোট দুটি গ্রাম। গ্রামের বেশ কয়েকজন
দরিদ্র মানুষ প্রতারিত হয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন
২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর
দেওয়া রায়ে আদালত বলেছিলেন,
আত্মীয় না হয়েও
কেউ আবেগের বশবর্তী হয়ে কাউকে কিডনি দান করতে চাইলে তা যেন তিনি করতে পারেন, তার জন্য আইন
সংশোধন করতে হবে।
ঢাকার বাসিন্দা ফাতেমা
জোহরার একটি কিডনি ২০১৫ সালে তাঁর মেয়ের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রতিস্থাপনের
পরেও মেয়ের পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন, ১৯৯৯–এর তিনটি ধারার
বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ফাতেমা জোহরা ২০১৭ সালে রিট করেন। সরকার ওই আইন ২০১৮ সালে
সংশোধন করে। সংশোধন করে নিকটাত্মীয়ের তালিকা বড় হয়। তবে রিট আবেদনকারীর সম্পূরক
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সম্পূরক রুল দেন। ওই রুল নিষ্পত্তি করে আদালত ২০১৯
সালের ৫ ডিসেম্বর রায় দেন।
জেডআই/