• ঢাকা শনিবার
    ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

খালেদ মোশাররফসহ ৩ সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলায় আবদুল জলিলকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৩, ০৩:১৫ এএম

খালেদ মোশাররফসহ ৩ সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলায় আবদুল জলিলকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ক্যু পাল্টা ক্যুর মধ্যে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার আসামি ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাবেক মেজর আবদুল জলিলকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ,র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনী। এরই মধ্যে সাবেক মেজর আবদুল জলিলকে গ্রেফতারের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

ডিএমপি‍‍`র মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার আজিমুল হক শুক্রবার  বলেন, মামলাটি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলায় আসামিদের মধ্যে একমাত্র ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাবেক মেজর আবদুল জলিলের নাম উল্লেখ করা হয়। তিনি এখনও বেঁচে আছেন। এ ছাড়াও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। তবে এর সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার বাদী নিহত কর্নেল (অব.) নাজমুল হুদার মেয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান এবং জাসদ নেতা কর্নেল আবু তাহের বীর বিক্রমের নির্দেশে নাজমুল হুদাসহ ৩ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তার বয়স যখন ৫ বছর ও তার বড় ভাইয়ের বয়স ৮ বছর, তখন তার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭২ বিশেষ কমান্ডার হিসেবে রংপুরে কর্মরত ছিলেন। ওই অবস্থায় ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনীর বিপথগামী, বিশৃঙ্খল সদস্যদের হাতে তার বাবা নিহত (শহিদ) হন। তার সঙ্গে অপর দুই সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল এটিএম হায়দার বীর উত্তম নিহত (শহিদ) হন।

পরে তারা বড় হয়ে বাবার কোর্সমেট, কলিগ ও বিভিন্ন সূত্র থেকে নিজেদের অনুসন্ধানে জানতে পারেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকালে তার বাবাসহ অন্য দুই সামরিক কর্মকর্তা ১০ ইস্ট বেঙ্গলের অফিসে উপস্থিত ছিলেন। যেটি তখন জাতীয় সংসদ ভবনের এমপি হোস্টেলে ছিল। সকালে তার বাবা যখন নাশতা করছিলেন, তখন দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি থেকে দশম ইস্ট বেঙ্গলের সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল নওয়াজেশের কাছে টেলিফোন আসে। এরপর তার বাবাসহ অন্য দুই সামরিক কর্মকর্তাকে বাইরে নিয়ে আসে দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তারা।

নাহিদ ইজহার খান এজাহারে আরও উল্লেখ করেন আমাদের অনুসন্ধানে আরও জানতে পারি, তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু তাহেরের (অব.) নির্দেশে দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও এবং সৈনিকরা সংঘবদ্ধভাবে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

এজাহারে বলা হয়, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (তৎকালীন ক্যাপ্টেন) সিরাজ ও মেজর মুকতাদির, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান সাবেক (তৎকালীন ক্যাপ্টেন) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তারা (বাদী) আরও জানতে পেরেছেন, দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা জেসিও ও সৈনিকদের সঙ্গে মেজর মো. আসাদউজ্জামান (অব.) এই ৩ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গুলি করার পর বেয়োনেট চার্জ করেন।

 

জেকেএস/

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ