• ঢাকা শনিবার
    ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন দূতাবাসকে ধোঁকা দিয়ে যেভাবে নেওয়া হতো ভিসা

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩, ০১:২২ এএম

মার্কিন দূতাবাসকে ধোঁকা দিয়ে যেভাবে নেওয়া হতো ভিসা

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

এনজিওর আড়ালে জাল কাগজপত্র তৈরি করে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর নামে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ চক্রের আরও এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।

সোমবার (১২ জুন) চাঁদপুর থেকে অভিযুক্ত রিয়াজ মাহমুদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে ১ টি মোবাইল ও ১টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার রিয়াজ মাহমুদ আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সদস্য। তাকে গুলশান থানায় রুজুকৃত মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন- মানবাধিকার সংগঠনের জালিয়াতিতে গোলকধাঁধায় জাতিসংঘ-মার্কিন দূতাবাস!

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রিয়াজসহ এই চক্রের অন্যান্য সদস্যরা এনজিওর আড়ালে টাকার বিনিময়ে মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে আমেরিকা, ফ্রান্সসহ উন্নত দেশগুলোতে মানবপাচার করেছে। তারা এনজিওর বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়ে কনফারেন্সে যোগদানের জন্য জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ই-মেইল পাঠাত। পরবর্তীতে আমেরিকার ভিসা পাওয়ার জন্য ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাসে হাজির হয়ে জাল কাগজপত্র দাখিল করে আমেরিকার ভিসার জন্য আবেদন করতো।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারদের এ ধরনের প্রতারণায় বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই চক্রের কারণে যে সকল ব্যক্তি প্রকৃত কারণে মার্কিন ভিসার জন্য আবেদন করেন, তারা নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

ইতোমধ্যে এ ঘটনায় রিয়াজ ছাড়াও আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের আরও ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চক্রের কৌশল সম্পর্কে জানান, প্রোটেকশন ফর লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামে কথিত এক প্রতিষ্ঠানকে মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে প্রচার করত চক্রের সদস্যরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অফিসে ও মেইলে বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তির অভিযোগ আসে। সেগুলো আমেরিকা ও ফ্রান্সসহ উন্নত দেশে পাঠানোর কথা বলে অর্থ ও পাসপোর্ট নেয় সংগঠনটি। এরপর ডকুমেন্ট তৈরি করে ইউএন ইকোনমিক ও সোশ্যাল কাউন্সিলের বিভিন্ন প্রোগ্রামের এটাচমেন্টসহ রেজিস্ট্রেশনের পর এনজিও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার পরিচয়ে ইকোসক কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার অনুমতি চেয়ে মেইল করে। ইউএন সদর দপ্তর অনুমতি দিলেই শুরু হয় আর্থিক প্রতারণা।

অনুমতিপত্র দেখিয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় যেতে আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় বড় অঙ্কের টাকা।

অ্যাম্বাসিতে পাসপোর্টসহ কাগজপত্র জমা দিয়ে বিভিন্ন মেয়াদের ভিসা নিয়ে আমেরিকায় যায়। কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও অবৈধ নানা পন্থায় আমেরিকায় থেকে যায়। এভাবে চক্রটি জাতিসংঘ ও মার্কিন দূতাবাসকে ধোঁকা দিয়ে মানবপাচার করে আসছিল। জালিয়াতির বিষয়টি নজরে আসার পর গুলশান থানায় মামলা করে মার্কিন দূতাবাস।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ