প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২১, ০৮:০১ পিএম
ছাত্র অধিকার সংগ্রাম পরিষদের দুই নেতা নুরুল
হক নুর ও রাশেদ
খানের মধ্যে বেশ কিছু দিন
ধরেই ভেতরে ভেতরে মানসিক ও সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব
চলে আসছিল। সেটার খুবই বাজে বহিঃপ্রকাশও
হয়েছিল রোববার (৪ জুলাই)।
অস্পষ্ট এই দ্বন্দ্বের জেরে
রাশেদকে সংঠন থেকে বহিষ্কারের
নোটিশও দিয়েছিলেন নুরুল হক নুর। নুরের
কাছে কারণ জানতে চেয়ে
পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দেন রাশেদও। পরিস্থিতি
যখন ঘোলাটে হচ্ছিল ঠিক তখনই জরুরি
অনলাইন মিটিংয়ের মাধ্যমে সেই দ্বন্দ্বের সমাধান
করা হয়। এমনটি গণমাধ্যমকে
জানান নুর ও রাশেদ
দুজনই।
সমাধানের
খবর গণমাধ্যমে আসার পরও নুর
সামাজিক ও বিভিন্ন মাধ্যমে
বলেছেন, ‘বিভিন্নভাবেই রানৈতিক দল ভাঙনে সরকারের
গোয়েন্দা বাহিনী বা সরকারের ইন্ধন
থাকে। আমরা যেহেতু সরকারবিরোধী
জায়গা থেকে রাজনীতি করি;
আমাদের প্লাটফর্ম ভাঙনের জন্য এখানেও গোয়েন্দা
বাহিনী জড়িত থাকতে পারে।’ এখানে
মূলত নুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে রাশেদের দেয়া বিজ্ঞপ্তির কথা
বলেছেন নুরুল হক নুর। তবে
‘আমরা এখনও তরুণ, ভুলত্রুটি
করতেই পারি।’ মুরব্বিদের পরামর্শে এই দ্বন্দ্বের সমাধান
করে একসঙ্গে রাজনীতি করার লক্ষ্যে আবার
মিলিত হয়েছি বলে সিটি নিউজকে
জানান আরেক নেতা রাশেদ
খান।
দ্বন্দ্ব
কী ব্যক্তিগত না সাংগঠনিক? এমন
প্রশ্নের জবাবে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘রাজনীতিতে
নেতৃত্বের জায়গা থেকে দ্বন্দ্ব খুব
স্বাভাবিক একটা বিষয়। বাংলাদেশের
যে বড় রাজনৈতিক দলগুলো
তাদের মধ্যেও আছে। আমাদের মধ্যেও
এ রকম ভুল বোঝাবুঝি
ও মনোমালিন্য হয়েছিল। এগুলো থাকবেই স্বাভাবিক। এগুলোকে কাটিয়ে কীভাবে সামনের দিকে কাজ করা
যায় আমরা সেই লক্ষ্যেই
কাজ করছি। সব কিছু ভুলে
আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দল
গঠনের দিকে এগোচ্ছি। সেটা
মাসখানেকের মধ্যেই আত্মপ্রকাশ করবে। রাজনৈতিক দল গঠনের পরই
ছাত্র অধিকার সংগ্রাম পরিষদের কাউন্সিল হবে। আর কালকের
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নুরুল হক নুর যেহেতু
ডাকসুর ভিপি; তাই তার একটা
গ্রহণযোগ্যতা আছে। সে অনুযায়ী
তাকে ছাত্র, যুব ও শ্রমিক
অধিকার পরিষদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই
দায়িত্বে তিনি থাকবেন রাজনৈতিক
দল আত্মপ্রকাশ না করা পর্যন্ত।
আপনার
বিজ্ঞপ্তিতে নুরুল হক নুর গোয়েন্দা
সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন, সেটা
কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে রাশেদ বলেন, ‘এই পোস্ট যে
তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করেই দিয়েছেন সেটা
আমি নিশ্চিত নই। আমি একজন
অধিকার কর্মী, রাজনীতি করি। আমি কথা
বলি ছাত্রদের সঙ্গে, শ্রমিকদের সঙ্গে, খেটে খাওয়া সাধারণ
মানুষের সঙ্গে। আমার সঙ্গে গোয়েন্দা
সংস্থার যোগাযোগ থাকবে ক্যান? সেই কোটা সংস্কার
আন্দোলন থেকে এখন পর্যন্ত
আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কেউ কোনো বাজে
কথা বলতে পারেনি। এটা
কেউ বলতে পারবে না,
আমি কারও সঙ্গে লিয়াজোঁ
করে রাজনীতি করি। এমন কোনো
তথ্যপ্রমাণ কেউ দিতে পারবে
না। আমার মনে হয়
না তিনি আমাকে ইন্ডিকেট
করে এই পোস্ট দিয়েছেন।
তবে এমন সময় এ
ধরনের পোস্ট করে তিনি ঠিক
করেননি। এটা জনমনে এক
ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।’
আপনাদের
দ্বন্দ্ব নিরসনে সিনিয়রদের কেউ মধ্যস্থতা করেছে
কি না? এমন প্রশ্নের
জবাবে রাশেদ বলেন, ‘হ্যাঁ, যারা আমাদের ভালোবাসেন,
আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন
এবং ভবিষৎ ভাবেন তারা আমাদের এই
বিষয়গুলো নিরসনে পাশে থাকেন এবং
পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ
ক্ষেত্রে আসিফ নজরুল স্যার
এবং যারা আমাদের সঙ্গে
সব সময় থাকেন তারা
ভূমিকা রেখেছেন। কারণ তারা চান
আমরা সবাই এক হয়ে
দেশের জন্য কাজ করি।’
নুর-রাশেদের নেতৃত্বের এই দ্বন্দ্ব নিয়ে
নিজের মূল্যায়ন জানতে চাইলে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন,
‘আমি এই বিষয়ে কোনো
কথা বলতে চাই না।’ এ দিকে জাফরুল্লাহ
চৌধুরী বলেন, ‘ওরা ছেলে মানুষ।
ওদের নিয়ে আমি কী
বলব! নো কমেন্টস!’
সাগর/এম. জামান