
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২, ০৮:২৫ পিএম
এবারের
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছিল বাংলাদেশ দল। টেস্ট সিরিজের পর
টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ধরাশয়ী হয়েছে টাইগাররা। তবে ওয়ানডে সিরিজে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লাল
সবুজ দল। শুধু ঘুঁরে দাঁড়ানোই নয়, এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতে নিয়েছে সফরকারিরা। তাই তৃতীয়
ও শেষ ওয়ানডেতে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা ক্রিকেটারদের সুযোগ করে দিতে বিশ্রাম নিবেন
অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সেই 'যে কেউ' এখন নিজেও হতে
রাজি অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এমনিতে দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ঝুঁকি নিতে বরাবরই
অনীহা ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের। নেহাত সমালোচনার তীব্রতা না বাড়লে সাজানো একাদশে
হাত দিতে চান না কেউই। কিন্তু এবার সেই প্রথা ভাঙার ইঙ্গিত দিয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক
তামিম ইকবাল।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে
দাপট দেখিয়ে ২-০-তে সিরিজ জয় নিশ্চিত করার পর দলের 'বেঞ্চ স্ট্রেংথ' দেখে নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। যাঁরা রিজার্ভ
বেঞ্চে থেকেও খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান না, তাঁদের শনিবারের তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ দেওয়ার
পক্ষে রায় অধিনায়কের।
তাতে যদি ক্যারিবীয়দের
হোয়াইটওয়াশের সুযোগ হাতছাড়াও হয় তাতেও আপত্তি নেই কোচ ও অধিনায়কের। কারণ একে তো এই
সিরিজটি আইসিসি সুপার লিগের অংশ নয়। এখানে হার-জিতে সুপার লিগের কোনো পয়েন্টে
হেরফের হবে না, তাই এখনই সময়
বিশ্বকাপের দল সাজানোর পরীক্ষা করার।
'এখন আমাদের সময় এসেছে বেঞ্চ স্ট্রেংথ দেখে
নেওয়ার। সাধারণত যখন পয়েন্টের ব্যাপার থাকে তখন এই সুযোগ খুব বেশি থাকে না। কিন্তু
এরকম সিরিজে যদি ২-০-তে এগিয়ে যান, তখন যাঁরা খেলেননি বা যাঁদের নিয়ে আমরা অনেক
দিন দলের সঙ্গে ঘুরছি, তাঁদের সুযোগ
দেওয়া উচিত।'
তামিম ইকবালের এই কথার পর
নিশ্চিত হওয়া যেতেই পারে যে, পরের ম্যাচেই একাদশে দেখা যাবে এনামুল হক বিজয়কে। কিন্তু
কার পরিবর্তে নামানো হবে তাঁকে? কাকে বিশ্রাম দেওয়া হবে পরের ম্যাচে? কৌতূহল বাঁচিয়ে
রেখেই তামিমের ইঙ্গিত, প্রয়োজনে তিনি
নিজেও বিশ্রাম নিতে পারেন,
'একাদশে পরিবর্তনের জন্য যদি আমারও যদি দু-এক মিস হয় তাহলেও কোনো সমস্যা নেই।'
সেই সঙ্গে বোলিংয়েও বড়
ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। পেসার এবাদত হোসেনকে নেওয়া হতে পারে মুস্তাফিজ কিংবা
শরিফুলের জায়গায়। এমনও হতে পারে, তাসকিনকে ফিরিয়ে একজন স্পিনারকে বসিয়ে রাখার। আবার এমনও হতে
পারে, তিন স্পিনারের
সফল তত্ত্ব ঠিক রেখে নাসুম কিংবা মিরাজকে বসিয়ে তাইজুলকে খেলানোর। সবই হতে পারে, কেননা কোচ রাসেল
ডমিঙ্গোও দ্বিতীয় ম্যাচের পর ঘোষণা দিয়েছেন, বিশ্বকাপের আগে তাঁরা সেরা কম্বিনেশন পরীক্ষা
করার জন্য একাদশ এলোমেলো করবেন।
'শেষ ম্যাচটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক
থেকে। এতদিন এত গুরুত্বপূর্ণ সব ওয়ানডে সিরিজ খেলেছি, যেখানে সুপার
লিগের পয়েন্ট খুব জরুরি ছিল। দলে পরিবর্তনের কথা খুব একটা ভাবনায় আনা যায়নি। তবে
এখানে এবার সুযোগ আছে সেটা পরখ করে নেওয়ার। কারণ ২০২৩ বিশ্বকাপে তাকিয়ে কিছু
ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়ার ব্যাপার আছে।'
আগামী বছর ভারতে
অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বআসরে যে পাখির চোখ রেখেছেন তামিম সেটা আরও একবার পরিস্কার করে
দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে এটাও বোধ করেছেন দলের প্রতিটি পজিশনের জন্য 'ব্যাকআপ' ক্রিকেটার তৈরি
রাখতে হবে। 'বেঞ্চ স্ট্রেংথ
অবশ্যই আমাদের পরীক্ষা করা উচিত।
এই একটা জিনিস বাংলাদেশের
ক্রিকেটে আমরা খুব কম করি। সব ম্যাচ তো আমরা অবশ্যই জিততে চাই। তবে মাঝে মধ্যে এটা
করা খুব জরুরি, বিশেষ করে
ওয়ানডেতে। কারণ, কে জানে, বড় সিরিজে গিয়ে
দুজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার চোট পেতেই পারে। তখন একটা ছেলে কোনো ম্যাচ অনুশীলন
ছাড়া এসে খেললে তার কাজটা একটু কঠিন হয়ে ওঠে। তাই শেষ ম্যাচে এরকম অনেকে খেলবে, যারা খুব বেশি
খেলেনি।'
ঢাকা লিগে এবার হাজারের ওপর
রান করে রেকর্ড গড়েন এনামুল হক বিজয়। তাঁর সেই পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে
জাতীয় দলে ডাক পান। কিন্তু যে ফরম্যাটে সবচেয়ে সফল ছিলেন তিনি, সেই ফরম্যাটেই
কিনা এখন পর্যন্ত পরখ করা হয়নি। তাঁর বদলে টেস্ট আর টি২০ ম্যাচ খেলিয়ে বিজয়ের
দুর্বলতাগুলোই শুধু প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজয় কেন ওয়ানডে স্কোয়াডে
নেই- বলে ফেসবুকে যাঁরা আক্ষেপের সুর তুলেছেন কয়েকদিন ধরে, তাঁরা হয়তো তামিম
ও রাসেল ডমিঙ্গোর কথায় এবার আশ্বাস পেতে পারেন। তামিমের আগামী বছরের বিশ্বকাপ
ভাবনায় যেসব ক্রিকেটার রয়েছেন তাঁদের তিনি আগামী কয়েকটি সিরিজেই সুযোগ দেবেন।
বিশেষ করে ক্যারিবীয় সিরিজের পরই জিম্বাবুয়ে সফর রয়েছে, সেখানেও একাদশে
একাধিক পরিবর্তন এনে তিনি মাঠে নামবেন। কেননা ওই সিরিজটিও আইসিসি সুপার লিগের অংশ
নয়।
জেডআই/