প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২২, ১১:৩১ এএম
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের ১১ কিলোমিটার রাস্তা মামলাসহ নানা জটিলতার কারণে গত এক যুগ ধরে উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে পর্যটকসহ স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলাপাড়া উপজেলার পাখিমাড়া বাজার থেকে মহিপুর পর্যন্ত সড়কটিতে বহু খানাখন্দে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। মহাসড়কের ওই অংশটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন কুয়াকাটায় ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক ও স্থানীয় জনগণ। এসড়কে সব চেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে মোটরসাইকেল এবং তিন চাকার যানবাহন। বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্ত থাকায় এসব যানবাহনকে গর্ত এড়িয়ে চলতে হয়। মাঝে মঝে যাত্রীসহ অটোরিকশা উল্টে যায়। ঘটে অটোরিকশা থেকে যাত্রীদের ছিটকে পরার ঘটনা।
পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা জানান, পাখিমাড়া থেকে মহিপুর পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ দিন ধরে রুটিন মেরামতে বিটুমিন ও ইট-পাথরের খোয়ার পট্টি দিয়ে চলাচলের উপযোগী রাখার কারণে পুরো রাস্তা দেবে গিয়ে উঁচু-নিচু হয়ে আছে। এ পথে চলতে গিয়ে গাড়ির যাত্রীদের প্রচণ্ড ঝাঁকুনি সহ্য করতে হয় যা পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে চরম পিড়াদায়ক। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় বেড়েছে পর্যটকদের আনাগোনা, তার সঙ্গে বেড়েছে গাড়ির চাপ। আর এসব কিছুর প্রভাব পড়েছে রাস্তার উপর। একদিকে সরু অমসৃণ উঁচু-নিচু রাস্তা অন্যদিকে নতুন রাস্তা তৈরি না হওয়ায় প্রতিদিনি ছোট বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যা পর্যটন শিল্পের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে কলাপাড়া পৌর শহর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সওজ কর্তৃপক্ষ। ২২ কিলোমিটার সড়কের ১১ কিলোমিটার অংশের নির্মাণকাজ করে দি রুপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের কাজের কারণে বিল নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। আর তা পৌঁছায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। মামলাটি এখনো হাইকোর্টে চলমান রয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সওজ কর্তৃপক্ষ নতুন করে সড়কটির নির্মাণে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। শুধুমাত্র বছর বছর রুটিন মেরামতের মাধ্যমে জোড়া তালি দিয়ে সড়কটি সচল রাখার চেষ্টা করছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাসুদ খান জানান, সমস্যা সমাধানে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। দ্রুত ঠিকাদার ও অধিদফতরের মধ্যে বিরোধ আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে বলে আমরা মনে করি। বৃষ্টিতে সড়কে যেসব খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে তা শিগগির মেরামত করা হবে।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু চালুর পর ফেরিবিহীন যাত্রা পথের জন্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে কুয়াকাটা যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ঢাকা থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ২৭০ কিলোমিটার, পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। রাজধানী থেকে ২৭০ কিলোমিটার সড়কে মাত্র ১১ কিলোমিটার ছাড়া বাকি সব পথটুকুই আরামদায়ক
এএল/