• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষক শূণ্যতায় মাগুরা পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে পাঠদানে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩, ১০:৫৯ পিএম

শিক্ষক শূণ্যতায় মাগুরা পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে পাঠদানে অনিশ্চয়তা

মাগুরা প্রতিনিধি

ডেপুটেশনে থাকা সব শিক্ষক একযোগে বিদ্যালয় ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক সংকটের মুখে পড়েছে মাগুরা প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়টি। বছরের শুরুতেই এ ধরনের পরিস্থিতিতে সন্তানের পাঠদান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। এমনকি বই বিতরণের ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে জটিলতা। অনেক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের গতকাল সোমবার বই না নিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সারা দেশে ডেপুটেশনে থাকা শিক্ষকদের ডেপুটেশন বাতিল করে স্ব স্ব বিদ্যালয়ে ফিরে যাওয়ার আদেশ দেয়া হয়। অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ডেপুটেশনে থাকা শিক্ষকের সংখ্যা কম থাকায় তেমন একটি সমস্যা তৈরি হয়নি। কিন্তু মাগুরা প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পিটিআইয়ের আওতায় থাকা পরীক্ষণ নামের এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষিকাই ডেপুটেশনে নিযুক্ত থাকায় সমস্যায় পড়েন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষার কারণে ১ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত তাদেরকে সেখানে বহাল রাখে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে সোমবার পিটিআইয়ের সুপার তাদের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে পূর্ববর্তী স্ব স্ব স্কুলে ফেরত পাঠান। যে কারণে গোটা স্কুল শিক্ষকশূণ্য হয়ে পড়েছে। 

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সাল পর্যন্ত এসব পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে নির্ধারিত শিক্ষকদের দিয়ে পাঠদান করানো হতো। পরবর্তীতে ওইসব শিক্ষকগণ ইনসট্রাক্টর পদে পদোন্নতি হওয়ায় ডেপুটেশনে শিক্ষক নিযুক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক বছরে সারা দেশের এসব পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে স্থায়ীভাবে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ফলে ডেপুটেশনের ভিত্তিতেই কার্যক্রম চলে আসছে। অন্যদিকে পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের জন্যে কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে সারা দেশে একই সঙ্গে গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ডেপুটেশনে নিয়েজিত সকল শিক্ষককে স্ব স্ব বিদ্যালয়ে ফিরে যাবার নির্দেশ দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

সোমবার সকালে মাগুরা পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সব অভিভাবকই সেখানে তাদের ছেলে-মেয়েদের এনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। শ্রেণী কক্ষগুলো ফাকা পড়ে আছে। সেখানকার ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী আলফ হাসান দিয়া জানায়, রবিবার বই নিতে না পারায় সোমবার সে স্কুলে বই নিতে এসেছিল। কিন্তু শিক্ষকরা না থাকায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন শহরের মোল্যা পাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম নামের এক অভিভাবক। 

অভিভাবকরা জানান, বছরের শুরুতে তাদের কেউ বই নিতে, কেউ বাচ্চাদের ফলাফল নিতে, কেউ ছেলে-মেয়ের পাঠদান করানোর জন্যে এসেছিলেন। কিন্তু স্কুল শিক্ষকশূণ্য হওয়ায় তারা ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এই অবস্থায় এখানে কিভাবে আগামী দিনের শিক্ষা কার্যক্রম চলবে তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল ডেপুটেশন বাতিলের ক্ষেত্রে পরীক্ষণ বিদ্যালয়গুলোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা। 

নতুবা এখানকার ডেপুটেশন বহাল রেখে প্রজ্ঞাপন দেয়া। এ ব্যাপারে মাগুরা পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট শাহিদা বেগম বলেন, আমরা উপরের নির্দেশ মান্য করেছি। পাঠদান কিভাবে চলবে সে ব্যাপারে কোন নির্দেশনা এখনো পাইনি। একেবারেই কোনো পথ না থাকলে আমি ও প্রাইমারি ইনস্টিটিউটের ইনসট্রাক্টর দিয়ে কার্যক্রম চালাবো। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ এস এম সিরাজউদ্দোহা বলেন, নতুন কোনো নির্দেশনা না আসাই এ বিষয়ে আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যে নির্দেশনা পেয়ে যাবো।
                                       

এএল/

আর্কাইভ