 
              প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৩, ০৩:০১ এএম
-20230423150143.jpg) 
                 
                            
              ঈদের দ্বিতীয় দিনে খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে আলুটিলায় পর্যটক সমাগম বেড়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অন্তত ছয়শ ফুট উঁচু এই পর্যটন কেন্দ্রে সকাল থেকে ভিড় দেখা গেছে। ঈদের লম্বা ছুটিতে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য এটি।
রোববার দুপুরে পর্যটন কেন্দ্রের প্রতিটি পয়েন্টে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। আলুটিলার প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গ ঘুরে বেশি রোমাঞ্চিত হয়েছে পর্যটকরা।
রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা নিহা রহমান বলেন, আমরা এবার পাহাড়ে ঈদ করেছি। আলুটিলায় আসলাম খুবই ভালো লেগেছে। পুরো পরিবার নিয়ে এসেছি। কাল সাজেক যাব। এরপর রাঙামাটিতে যাব। এতো সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র না আসলে বুঝতে পারতাম না।
আরেক পর্যটক নিশাত ফেরদৌস বলেন, আলুটিলার প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই সুন্দর। এখানে এসে বৃষ্টি উপভোগ করেছি। এর আগেও পাহাড়ে গিয়েছি তবে খাগড়াছড়ি এবার প্রথম ভ্রমণ। খুব ভালো লেগেছে। আলুটিলার প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গ ঘুরে বেশি রোমাঞ্চিত হয়েছি।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে নব নির্মিত ঝুলন্ত সেতু দেখে উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা। এছাড়া দুই পাহাড়কে সংযোগকারী ‘লাভ ব্রিজে’ পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে। এছাড়া নন্দন পার্ক, কুঞ্জছায়া সবখানেই পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত।
জামালপুর থেকে বেড়াতে আসা মো. শাহীন জানান, ঈদের ছুটিতে বন্ধুরা মিলে বেড়াতে আসলাম। খুবই ভালো লাগছে। খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে কাল সাজেকে যাব।

প্রসঙ্গত, আলুটিলা কেন্দ্রের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর ‘রহস্যময় সুড়ঙ্গ’। স্থানীয় লোকের ভাষায় ‘মাতাই হাকর’ যার বাংলা অর্থ দেবগুহা। এ পাহাড়ের চূড়া থেকে ২৬৬টি সিঁড়ির নিচে আলুটিলা পাহাড়ের পাদদেশে পাথর আর শিলা মাটির ভাঁজে গড়া এ রহস্যময় সুড়ঙ্গের অবস্থান। গুহামুখের ব্যাস প্রায় ১৮ ফুট আর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮০ ফুট।
প্রবেশমুখ ও শেষের অংশ আলো-আঁধারিতে আচ্ছন্ন। মাঝখানে নিকষ কালো গাঢ় অন্ধকার এ গুহার তলদেশ দিয়ে প্রবহমান শীতল জলের ঝর্ণাধারা। গা ছমছম করা অনুভূতি নিয়ে এ গুহায় প্রবেশ করাটা একদিকে যেমন ভয়সংকুল তেমনি রোমাঞ্চকরও বটে। শুধু বাংলাদেশেতো বটেই পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেও এ রকম প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গ পথের খুব একটা নজীর নেই। অনন্য সাধারণ এ গুহায় মশাল বা উজ্জ্বল টর্চের আলো ব্যতীত প্রবেশ করা যায় না। মশাল পর্যটন কেন্দ্রেই পাওয়া যায় ১০ টাকার বিনিময়ে। গুহার একদিকে ঢুকে অন্যদিকে গিয়ে বেরোতে সময় লাগে মাত্র ১৫-২০ মিনিট। উপমহাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক এ সুড়ঙ্গ জেলার প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক কোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। ঈদের প্রথম দিনে ৩ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছে। সকাল থেকে পর্যটকদের সমাগম বাড়ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে আরও ৪-৫ দিন পর্যটক সমাগম বাড়বে।
এদিকে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য ছাড় দিচ্ছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। খাগড়াছড়ির অভিজাত হোটেল গাইরিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে আমাদের প্রায় ৫০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। রুম বুকিংয়ে এবার পর্যটকদের ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছি।
খাগড়াছড়িতে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশও কাজ করছে। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক বলেন, প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে আমাদের কন্ট্রোল রুমে নাম্বার দেয়া আছে। কোনো পর্যটক সমস্যায় পড়লে সেই নাম্বারে যোগাযোগ করলে আমরা সহযোগিতা করব। এছাড়া পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএস/
 
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      