• ঢাকা সোমবার
    ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী রসমালাই

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২২, ১২:৫৬ এএম

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী রসমালাই

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী রসমালাই

ফিচার ডেস্ক

রসমালাই একটি জনপ্রিয় মিষ্টি খাদ্য। রসমালাই খান না, এমন লোক খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। দেশের বিভিন্ন স্থানে রসমালাই তৈরি হলেও কুমিল্লার রসমালাই স্বাদে অতুলনীয়।

উনিশ শতকের প্রথম দিকে কুমিল্লার ঘোষ সম্প্রদায় দুধ ঘন করে ক্ষীর বানিয়ে তাতে ছোট আকারের শুকনো রসগোল্লা ভিজিয়ে যে মিষ্টান্ন তৈরি করে তা ক্ষীরভোগ নামে পরিচিতি পায়। ক্রমান্বয়ে এই ক্ষীরভোগ রসমালাই নামে পরিচিত হয়ে উঠে।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সবচেয়ে দামি বিয়ে

প্রথমে বিভিন্ন গোয়ালার কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করা হয়। এরপর ওই দুধ চুলার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় জ্বাল দেওয়া হয়। অন্তত দুই ঘণ্টা জ্বাল দেওয়ার পর দুধ ঘন হয়ে ছানায় রূপ নেয়। এরপর ছানা কেটে ছোট ছোট দানাদার মিষ্টির মতো বানানো হয়। পরে রসের মধ্যে দিয়ে সেটি রসমালাইতে পরিণত করা হয়। দুধের ঘনত্ব যত বেশি হবে,  রসমালাই তত বেশি সুস্বাদু হবে।

বিখ্যাত এই রসমলাই স্বাদে আসল ও ঘ্রাণে খাঁটি পেতে যেতে হবে কুমিল্লা শহরের মনোহরপুরের কুমিল্লা মাতৃভান্ডার নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। এইখান থেকেই অমৃত এই রসমলাই যাত্রা শুরু করেছিল। সুনাম ধরে রাখতে অত্যন্ত সতর্কতা ও পরিবেশ সম্মতভাবে রসমালাই উৎপাদন করে প্রতিষ্ঠানটি। ভোজন রসিকদের কাছে এর স্বাদ আলাদা,  ঘ্রাণও আলাদা।

কুমিল্লার মাতৃভান্ডারের ঐতিহ্যবাহী রসমালাই তৈরির প্রক্রিয়া খুবই সহজ। একটি পাতিলে বা কড়াইয়ে একমন দুধ দুই ঘন্টা ধরে জ্বাল দিলে তা ঘন হয়ে ১৩/১৪ কেজি ক্ষীর তৈরি হয়। এর দুধ থেকে পাওয়া ছানার সাথে কিছু ময়দা দিয়ে খামির তৈরি করে বানানো হয় ছোট ছোট গুলি বা শুকনো রসগোল্লা। এক কেজি ছানাতে এক ছটাক পরিমাণ ময়দা দিয়ে এ গুলি বানানো যায়।

মাতৃভান্ডারের এক অভিজ্ঞ কারিগর জানান, এক মণ দুধ দিয়ে ঘন ক্ষীর তৈরি করে তাতে ছোট গুটি বা শুকনো রসগোল্লা দিয়ে ১৪ কেজির মতো রসমালাই বানানো যায়।

আরও পড়ুনঃ পৃথিবী ধ্বংসের গুরুত্বপূর্ণ সব আলামত

কুমিল্লা শহরের নামকরা মিষ্টির দোকানগুলোতে রসমালাই কেনার জন্য প্রতিদিনই উপচে পড়া ভিড় থাকে। তবে কুমিল্লার মাতৃভান্ডারের রসমালাইয়ের কদর বেশি। সবচেয়ে উৎকৃষ্ট রসমলাই হিসেবে এর সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়েছে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিদেশী ও দেশি আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় কান্দিরপাড় নগরের মনোহরপুর এলাকার মাতৃভান্ডারের রসমালাই দিয়ে। 

এটি কুমিল্লার কান্দিরপাড় মনোহরপুরে রাজ রাজেশ্বরী কালী মন্দিরের সম্মুখে অবস্থিত। পাশাপাশি একই এলাকার ভগবতী প্যাড়া ভান্ডার, শীতল ভান্ডার, পোড়াবাড়ি, জেনিস, জলযোগ, কুমিল্লা মিষ্টি ভান্ডারের রসমালাইয়ের চাহিদা বেশি। বাইরের চাকচিক্যের চেয়ে স্বাদ এবং মানই এসব দোকানিদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কুমিল্লায় অতিথি আপ্যায়নে রসমালাই সব সময় থাকে। আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে গেলে এই জনপদের মানুষ রসমালাইকেই বেশি গুরুত্ব দেন।

 

সাজেদ/

আর্কাইভ