• ঢাকা শুক্রবার
    ১০ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা শেষ হয়ে যাবে অক্সিজেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১, ০৪:৪৩ পিএম

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা শেষ হয়ে যাবে অক্সিজেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সূর্যের তাপে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়া আর সাগর, মহাসাগরের সবটুকু পানি উবে যাওয়ার আগেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে উবে যাবে শ্বাসের বাতাস অক্সিজেন। ছিঁড়ে ফালাফালা হয়ে যাবে পৃথিবীকে চারপাশ থেকে মুড়ে রাখা ওজোন গ্যাসের চাদর। সব ধরনের সৌর বিকিরণ ও মহাজাগতিক রশ্মির হামলা এটি আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।

সৌর বিকিরণ আর মহাজাগতিক রশ্মি চুরচুর করে ভেঙে দেবে এই নীলাভ গ্রহের বায়ুমণ্ডলকে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো যে গ্রিনহাউস গ্যাসের বাতাসে নির্গমনের মাত্রা বৃদ্ধিতে আমরা এখন যারপরনাই উদ্বিগ্ন, সেই গ্যাসই তখন আর থাকবে না বায়ুমণ্ডলে। ফলে, অক্সিজেন-নির্ভর প্রাণের পক্ষে টিকে থাকা যেমন সম্ভব হবে না, তেমনই অসম্ভব হয়ে পড়বে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণও। তাদের রান্নাবান্নার যাবতীয় প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।

২৪০ কোটি বছরেরও আগে পরিস্থিতি যে রকম ছিল পৃথিবী আবার ফিরে যাবে সেই অবস্থায়। পৃথিবী ভরে যাবে তখন অত্যন্ত বিষাক্ত মিথেন গ্যাসে। বিভিন্ন তাত্ত্বিক মডেল খতিয়ে দেখে করা সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই অশনিসঙ্কেত দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ।

গবেষকরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের ঔজ্জ্বল্যের বাড়া-কমার প্রবণতা এবং তার প্রেক্ষিতে বায়ুমণ্ডলে কীভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ কমে-বাড়ে, সে সবের যাবতীয় তথ্যও বিশ্লেষণ করেছেন।

ভিনগ্রহে কী প্রকৃতির প্রাণের হদিস মিলতে পারে, সেই প্রাণ বেঁচে থাকে কোন কোন প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর নির্ভর করে তা জানার লক্ষ্যে নাসার একটি বিশেষ প্রকল্প ‘নেক্সাস ফর এক্সোপ্ল্যানেট সিস্টেম সায়েন্স’-এর অংশ এই গবেষণাটি।

দুই মূল গবেষক আমেরিকার জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ভূবিজ্ঞানী অধ্যাপক ক্রিস রেনহার্ড ও জাপানের তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক কাজুমি ওজাকি জাবি করেছেন, ‘এই পরিস্থিতি আসবে সূর্যের তাপে পৃথিবী জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়ার আগেই। সেই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভরে যাবে শুধুই বিষাক্ত মিথেন গ্যাসে। যে গ্যাসে নির্ভর করে বাঁচতে পারে বিশেষ কয়েকটি অণুজীব। তখন মানুষ, অক্সিজেনের ওপর নির্ভরশীল কোনো প্রাণী বা সালোকসংশ্লেষণ-নির্ভর কোনো উদ্ভিদই আর টিকে থাকতে পারবে না পৃথিবীতে। ২৪০ কোটি বছরেরও আগে এমনই অবস্থা ছিল পৃথিবীর। এই গ্রহ আবার সেই পরিবেশে ফিরে যাবে। সেটা আর ১০০ থেকে ২০০ কোটি বছরের মধ্যেই হতে পারে।’

গবেষকরা এও জানিয়েছেন, গবেষণার এই ফলাফল বুঝিয়ে দিচ্ছে, মিথেন বা অন্য কোনো গ্যাসনির্ভর প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে ভিনগ্রহের ভিন মুলুকে। এবার সেই ধরনের প্রাণের খোঁজ-তল্লাশের সময় এসেছে।

 

শামীম/ডাকুয়া

আর্কাইভ