• ঢাকা সোমবার
    ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তির আনন্দ দেবে মেট্রোরেল

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২২, ০৩:৫৮ পিএম

মুক্তির আনন্দ দেবে মেট্রোরেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হতে চলেছে পরিবহন খাতে। খুলতে যাচ্ছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। সব বাধা পেরিয়ে স্বপ্নের মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ (২৮ ডিসেম্বর)। মেট্রোরেলের ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (এমআরটি-৬) লাইনের ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দিয়াবাড়ী-আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুর পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম যোগাযোগ  প্রকল্প হলো এই মেট্রোরেল। তিন ধাপে ২০২৫ সালের মধ্যে চালু হবে কমলাপুর পর্যন্ত সম্পূর্ণ  মেট্রোরেল।

শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছে, ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার এই পথ পাড়ি দিতে  মেট্রোরেলের সময় লাগবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ড। যানজটের নগরী ঢাকায় বাস কিংবা অন্য যানবাহনের চেয়ে এত দ্রুত যাতায়াত ঢাকাবাসীকে স্বস্তি দেবে। শুরুতে  মেট্রোরেল চলবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলার সময় ট্রেনগুলো মাঝপথে কোথাও থামবে না।

আধুনিক প্রযুক্তির তৈরি মেট্রোরেলে পুরুষ চালকদের সঙ্গে অন্তত ছয়জন নারী চালক এই ট্রেন চালাতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক। তিনি জানান,  সবগুলো ট্রেন চালানোর জন্য পর্যাপ্ত চালক নিয়োগ করা হয়েছে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পথে যেখানে লাইন সোজা, সেখানে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলবে মেট্রোরেল। আর যেখানে কিছুটা বাঁক রয়েছে, সেখানে কিছুটা কম গতিতে চলবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেট্রোরেল চালু হলেও এখনি যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলছে না। তবে এটুকু পথ যে দ্রুতগতিতে আসতে পারছেন তাতেই আপাতত খুশি সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, যানজটে নাকাল থাকা নগরীতে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে মেট্রোরেল। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে পুরো চাপ রাজধানীতে নিতে না হলেও বাংলাদেশের পুরো চাপ ঢাকাকেই বহন করতে হচ্ছে। আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি। নামিদামী স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, শিল্প-কারখানা, আদালত সবকিছু ঢাকাতে থাকায় প্রতিনিয়ত জীবিকার তাগিদে শত শত মানুষ ঢাকামুখী হন। এ কারণে সঠিক নগর ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু তার বাস্তবায়ন তো হয়নি বরং দিনকে দিন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ঢাকার রাস্তা হয়ে গেছে সংকুচিত। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি। অন্যদিকে কমে গেছে গণপরিবহন। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে রাজধানীতে নানা পরিকল্পনা নেয় সরকার। সেই পরিকল্পনার এক বিশেষ সংযোজন ছিল  মেট্রোরেল।  মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগে ২০১২ সালে সায় দেয় সরকার। এরপর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মেট্রোরেল নির্মাণে জাপানের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে সরকার। পরের বছর প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা তৈরির কাজ শুরু করে।

উল্লেখ্য, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত  মেট্রোরেল স্থাপনে চলমান এ  প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এরপর কমলাপুর পর্যন্ত যুক্ত হওয়ায় এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়। এরমধ্যে জাইকা ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা দিচ্ছে আর সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করবে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।

 

 

এনএমএম/এএল

আর্কাইভ