• ঢাকা মঙ্গলবার
    ১৭ জুন, ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
ডিবি হেফাজতে ছয় সমন্বয়ক

হারুনের কাছে কোনো প্রশ্নেরই সন্তোষজনক জবাব পাননি সোহেল তাজ

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৪, ১১:৩০ পিএম

হারুনের কাছে কোনো প্রশ্নেরই সন্তোষজনক জবাব পাননি সোহেল তাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে দেখতে গিয়েছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। কিন্তু তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি তাকে। কখন এই সমন্বয়কদের ছাড়া হবে, সে বিষয়েও কোনো সদুত্তর পাননি তিনি।
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ সোমবার বিকাল ৫টার দিকে মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন তিনি।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সোহেল তাজ বলেন, বিবেকের তাড়নায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের খোঁজ নিতে এসেছিলেন তিনি। ওই সমন্বয়কদের কেন এখানে আনা হয়েছে, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে কি না এবং কখন মুক্তি দেওয়া হবে—এসব বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার কোনো প্রশ্নেরই সন্তোষজনক জবাব পাননি।

ডিবিপ্রধানের কাছে ৩টি প্রশ্ন নিয়ে এসেছিলেন জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, আমার প্রথম প্রশ্ন ছিল, এই সমন্বয়কারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে নাকি নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, যদি গ্রেফতার হয়ে থাকে, তাহলে আমার কোনো দাবি নেই। কিন্তু যদি নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে আমি তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। ডিবিপ্রধান আমাকে পরবর্তী সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছেন, এই ছয় সমন্বয়কারী যেহেতু তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, সেই কারণে তাদের নিরাপদ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সোহেল তাজ আরও বলেন, এই কথা শুনে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, আপনারা কীভাবে বুঝলেন তারা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। তারা কি আপনাদের জানিয়েছিল, অনুরোধ করেছিল? আমাকে তখন তিনি বলেছেন, না। ওনারা বুঝতে পেরেছেন মনিটরিং (নজরদারি) করে। যেহেতু নিরাপদ হেফাজতে আছে, আমি তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। প্রত্যুত্তরে আমাকে জানানো হয়, দেখা করতে চাইলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দেখা করতে হবে।

সোহেল তাজ বলেন, আমার তৃতীয় প্রশ্ন ছিল, সমন্বয়কদের কখন নিরাপদ হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হবে? জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন তাকে নির্দেশনা দেবেন, তখনই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।

নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৭ সমন্বয়ক বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে আছেন। তাদের মধ্যে ছয়জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। 

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকালে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে সেখানে চিকিৎসাধীন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদসহ তিন সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে আসেন ডিবির কর্মকর্তারা। পরের দুই দিন আরও বাকি সমন্বয়কদের তুলে আনেন তারা।

পরে রোববার রাতে নাহিদসহ ৬ সমন্বয়ক এক ভিডিও বার্তায় তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। কাছাকাছি সময় ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ এক ফেসবুক পোস্টে এই সমন্বয়কদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়ার ছবি দিয়েছেন। 

এদিকে রোববার হাইকোর্টে একটি রিটের শুনানিতে এ প্রসঙ্গ উঠলে আদালত বলেছেন, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ