• ঢাকা সোমবার
    ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

কারামুক্ত বিএনপি নেতা রিজভী

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৩, ১০:২২ পিএম

কারামুক্ত বিএনপি নেতা রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময় কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

সিটি নিউজ ঢাকা কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য আরিফুর রহমান তুষার।  ঈদের আগেই ৫০ মামলার সবকটিতেই জামিন পেয়েছিলেন তিনি। 

সর্বশেষ মানহানির অভিযোগে গোপালগঞ্জে করা এক মামলায় গত ১৮ এপ্রিল জামিন পেলেও জামিননামার মূল কপি কারাগারে না পৌঁছানোর কারণে ঈদের আগে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। আজ জামিননামার মূল কপি হাতে হাতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হলে আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে বিএনপির এই শীর্ষ নেতাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

মুক্তির পর কারাফটকের সামনে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।

তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ জানান, রুহুল কবির রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ৫০টি মামলায় জামিন পান। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং কুমিল্লার আদালত থেকে এসব মামলায় জামিন পান। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা বেশির ভাগ মামলায় নাশকতার অভিযোগ আনা হয়। সর্বশেষ মানহানির মামলায় গোপালগঞ্জের আদালত থেকে জামিন পান তিনি। 

ঢাকা বিভাগীয় গনসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।  পরে পুলিশ বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রুহুল কবির রিজভীসহ চার শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করে।  পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ।  পল্টন ও মতিঝিল থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রুহুল কবির রিজভীকে কারাগারে পাঠানো হয়।  পরে আরো বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

কারাগারে থাকাকালীন সময়ে কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পরেন রুহুল কবির রিজভী।  সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল দুপুরে পুরান ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে তাকে প্রিজনভ্যানে করে কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার পথেই অসুস্থ হন।  তার অসুস্থতার চিন্তিত ছিলেন তার পরিবার।  তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে উন্নত ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম।  অসুস্থতার কথা শুনে কারাগারে ও আদালতে রিজভীর সঙ্গে দেখা করতে বাঁধার সম্মুখীন হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন আরজুমান আরা বেগম। 

বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরেরও দায়িত্বে রয়েছেন।  আশির দশকে আন্দোলনের সময় রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন।  তখন দেশে ও পরে বিদেশে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়।  এরপর থেকেই তার পেটে সমস্যা জটিল হয়ে আছে।  চিকিৎসকের পরামর্শে প্রায় ৩০ বছর ধরে রিজভী হাতের স্পর্শে খাবার খান না।  খোলা পানি খেতে পারেন না।  বোতলজাত পানি পান করতে হয়।  মহামারি করোনাকালেও তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় চার মাস হাসপাতালে ছিলেন।  এর আগে তার হার্ট অ্যাটাকও হয়েছিল।  চিকিৎসকের পরামর্শে খুবই মেপে জীবনযাপন করতে হয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিজভীকে।

 

বিএস/

আর্কাইভ