
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ০৮:২১ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে ভোট হবে নাকি আনুপাতিক হারে আসন বণ্টন হবে- তার জন্য কেউ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবন দেয়নি। তারা চেয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটাই মাত্র পথ হলো নির্বাচন।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে (আইইবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূতিতে শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর হাফিজ বলেন, এখন যারা ক্ষমতার মোহে পড়ে গেছেন, এখন শুধু প্যাঁচাচ্ছেন। সহজ পথ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সাধারণ জনগণ এলাকায় নেতা হিসেবে তাকে চান- যাকে তারা চেনেন, সব সময় পাশে পাবেন। কিন্তু শুধু মার্কা দিয়ে তাকে কিভাবে চিনতে পারবেন। পিআর পদ্ধতিতে দেখা যাবে- ভোলায় যে সংসদ সদস্য হবে, তার বাড়ি কুড়িগ্রামে।
তিনি বলেন, আজকে একজন শহীদ পিতা বলেছেন- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরা যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন দিয়েছেন, আজও তা অর্জিত হয়নি। এটা অত্যন্ত বেদনার্ত কথা। আমি মনে করি, এর কারণ হলো বর্তমানে যে সরকার আছে তারা কেউই জুলাই চেতনাকে ধারণা করে না। বিগত ১৫ বছর উপদেষ্টাদের কেউ শেখ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি কথা বলেননি। শুধু উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মাঝে মাঝে দুই-একটি কথা বলেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে পরাজিত করেছি। বিপ্লবে যারা জীবন দেন বিপ্লবের পর তাদের মূল্যায়ন করা হয় না। অনেক লোক কোথা থেকে গজিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের সব কৃতিত্ব নিয়ে নেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮১ হাজারের মতো। আর এখন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা আড়াই লাখ। এর কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে।
হাফিজ আহমেদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে বিএনপি একদিকে, আর অন্যদিকে ৩৪ দল। বিএনপির জনসমর্থন কত আর ৩৪ দলের জনসমর্থন কত- এটা দেখা হোক। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ৭২-এর সংবিধানকে তারা ছুড়ে ফেলে দিতে চায়। একটি রাজনৈতিক দল যারা ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, তারা এখন বলতে চায় তারা ভুল করেছে। এসব কথা বলার সুযোগ কোথায় পেল? মুক্তিযুদ্ধে আহত হয়েছিলাম, এসব কথা অত্যন্ত কষ্ট লাগে। আমাদের দেশে বিশাল সাহসী তরুণ সমাজ আছে, যা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই। এই তরুণ সমাজ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুস সোহবান, এ্যাবের সাবেক মহাসচিব আলমগীর হাসিন আহমেদ, আইইবি সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান, আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সদস্য প্রকৌশলী লোকমান প্রমুখ।