• ঢাকা শনিবার
    ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২

সচিবালয়ে উপদেষ্টারা অসহায়: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম

সচিবালয়ে উপদেষ্টারা অসহায়: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সচিবালয়ে উপদেষ্টারা অসহায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটা সুরক্ষিত?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের সংগঠন ‘অর্পণ আলোক সংঘ’।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শেষ করে দিয়েছে, স্বাস্থ্য শেষ হয়ে গেছে, এগুলোকে আবার নতুন করে গড়ে তোলার জন্য তো মানুষ লাগবে, সেই মানুষগুলো তো তৈরি করতে হবে আপনাকে। আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আপনি সেক্রেটারিয়েটে যাবেন, সেখানে গেলে ওই যে আমলারা বসে আছেন, তারাই সবকিছু নির্ধারণ করেন।

তিনি বলেন, আমাদের উপদেষ্টা যারা দায়িত্ব পালন করছেন এখন, অনেক ক্ষেত্রেই তারা অসহায়। তারপরও আমরা আশা করি, তারা (উপদেষ্টারা) এতদিন যে চেষ্টা করেছেন, সংস্কারের যেসব কমিশনগুলো আছে, তারাসহ আমরা সবাই মিলে একটা শুরু করতে পারি, যে শুরুটা দিয়ে আমরা একটা ভবিষ্যৎ একটা বাংলাদেশ, যেটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের দিকে আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেখুন, সেই গ্রামের একজন স্কুল শিক্ষক তার সমস্যার সমাধান করতে হলে তাকে ঢাকায় আসতে হয়। কেন? যেটার প্রয়োজন নাই, সেটা জেলাতেই যথেষ্ট। কিন্তু ওই যে সিস্টেম, ওই সিস্টেমে যদি সেন্টালে না আসে তাহলে ঘুষটা আসবে কোত্থেকে। এটাই বাস্তবতা। ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে, নার্সদের নিয়োগ হয় ঘুষ দিয়ে। তাহলে যেই ব্যবস্থাতে অনিয়ম চলতে থাকে, যে ধরনের বৈষম্য চলতে থাকে, সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারবেন না, এটা খুব ডিফিকাল্ট। আমাদের কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে যেতে এমন সিস্টেমের মধ্যে যেতে হবে, যেন আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা অন্তত যে ন্যায়বিচার, সেই বিচারটা নিশ্চিত করবেন জনগণের।

তিনি আরও বলেন, এই যে সমস্যার কথা বললাম, সমাধানের পথ কী? এটা আমার সিস্টেমের ওপর নির্ভর করবে। আমি যদি একটা জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন করতে পারি, আমি যদি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি, এর মধ্য দিয়ে আমি যদি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পার্লামেন্ট গঠন করতে পারি, তাহলে সেখানে আমি জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে পারব। আমি মনে করি, আপাতত এটা একটা ভালো পথ হবে, যেখানে গিয়ে আমি হয়তবা কিছুটা সমস্যার সমাধান করতে পারব।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানের পরেই যখনই আমরা নতুন করে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন সংস্কার শুরু করেছি, তখনই তো আপনার বিবাদ শুরু করেছি, তর্ক-বিতর্ক শুরু করেছি, ভালো কথা তর্ক-বিতর্ক তো হবেই, গণতন্ত্রে যেতে হলে। কিন্তু এমন জায়গায় যাচ্ছি মাঝে মাঝে, যে জায়গায় গিয়ে হতাশা এসে যায়।

বিএনপি মহাসচিব, আমাকে জোনায়েদ সাকি বারবার বলছিলেন, এমন কিছু বলবেন না যেটাতে হতাশা আসে। আমি হতাশাবাদী কখন ছিলাম না, আমি হতাশাবাদী হতেও চাই না। কিন্তু এটা তো সত্য কথা যে, হতে হচ্ছে। আমি যখন একটা প্রগতিবাদী সমাজ দেখতে চাই, আমি যখন একটা মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থা চাই, আমি যখন জনগণের যে বৈষম্য কমিয়ে আনতে চাই, তার আর্থিক বৈশিষ্ট্য বৈষম্য কমিয়ে আনতে চাই, তখন যদি আমি দেখি, সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে ভিন্ন চিন্তা করা হচ্ছে এবং সেটাকে ডাইভার্ট করার চেষ্টা করছে, মানুষের চিন্তা-ভাবনাগুলোকে এবং একটা উগ্রবাদে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন তো হতাশা আসবেই।

আয়োজক সংগঠনের প্রধান বীথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে সভায় গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, সাবেক সাংসদ রেহানা আক্তার রানু, অর্থনীতিবিদ এম মাসরুর রিয়াজসহ স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন নির্বাচিত প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।

আর্কাইভ