• ঢাকা শনিবার
    ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আগুন লাগলে যে দোয়া পড়তে বলেছেন নবীজি

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৩, ১২:৪২ এএম

আগুন লাগলে যে দোয়া পড়তে বলেছেন নবীজি

সিটি নিউজ

সামান্য অসচেতনতায় বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ড হতে পারে এবং ঝরে যেতে পারে শত শত তাজা প্রাণ। তাই কোথাও আগুন লাগলে প্রথমত, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার যথাসাধ্য চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, আগুন যেন আল্লাহ তাআলা নিভিয়ে দেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করাও উচিত।

প্রথম আমল হলো তাকবির দেওয়া। আবদুল্লাহ ইবনে উমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন দেখো, তখন তোমরা তাকবির দাও। কেননা, তাকবির আগুন নিভিয়ে দেবে। (তাবরানি: ১/৩০৭) তাকবির হলো: আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর।

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘এজন্য নামাজ, আজান ও ঈদের নিদর্শন হলো তাকবির। উঁচু স্থানগুলোতে অথবা কোনো যানবাহনে আরোহন করলে তাকবির পাঠ করা মুস্তাহাব। আগুন যত প্রলয়ঙ্করী হোক; তাকবিরের মাধ্যমে তা নিভে যায়। আর আজানের মাধ্যমে শয়তান পলায়ন করে। (ফতোয়া আল-কুবরা: ৫/১৮৮)

দ্বিতীয় আমল হলো বিতাড়িত শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া। অর্থাৎ আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম বেশি বেশি পড়া। প্রখ্যাত মুসলিম মনীষী আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যেহেতু অগ্নিকাণ্ড আগুনের মাধ্যমে হয়ে থাকে, আর আগুন শয়তানের একটি উপাদান। আর একটা সাধারণ দুর্ভোগ হলো শয়তানের উপাদান ও কর্মের সঙ্গে খাপ খাওয়া। যদি কোনো কিছু শয়তানের কর্ম-উপাদানের সঙ্গে খাপ খায়, তাহলে শয়তানের সহযোগিতা হয় এবং তার কর্মের বাস্তবায়ন হয়।

আগুন সাধারণত উর্ধমুখী হয়ে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে। আর এই দুইটি জিনিস (উর্ধমুখী হওয়া ও ধ্বংস করা) এগুলো শয়তানের কাজ। শয়তান এই দুইটির দিকে আহ্বান করে থাকে। এগুলোর মাধ্যমে বনি আদমকে ধ্বংস করে। অতএব, শয়তান ও আগুন—দুইটিই উর্ধমুখিতা ও ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করতে চায়।

আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব শয়তান ও তার কর্মকে অবদমিত করে দেয়। এজন্য আগুন নেভাতে তাকবির-ধ্বনি বা আল্লাহর মহৎ ও বড়ত্বের বাক্য খুব প্রভাব ফেলে। কেননা, কোনো কিছুই আল্লাহর বড়ত্বের সমপর্যায়ের হতে পারে না। অতএব যখন মুসলিম তাকবির-ধ্বনি পাঠ করে; তখন তার এই ধ্বনি আগুন নেভাতে ও শয়তানকে কর্মচ্যূত করতে দারুণ প্রভাব ফেলে। ফলে আগুন সহজে নিভে যায়। আমরা ও আমাদের সঙ্গীরা এই পরীক্ষা (তাকবির পাঠ করে আগুন নেভানো) করে সফল হয়েছি। (জাদুল মাআদ: ৪/১৯৪)

এছাড়াও, কোরআনে বর্ণিত এই দোয়াটি পড়বেন— ‘يَا نَارُ كُونِي بَرْدًا وَسَلَامًا عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ’ উচ্চারণ: ইয়া না-রু কু-নি বারদান ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম। অর্থ: ‘হে আগুন! তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া: ৬৯)

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে অগ্নিকাণ্ডের সময় উক্ত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন এবং আগুনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে আমাদের  রক্ষা করুন। আমিন।

আর্কাইভ