• ঢাকা মঙ্গলবার
    ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সক্রিয় শিবির কর্মী থেকে নৌকার মাঝি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২১, ১০:১২ পিএম

সক্রিয় শিবির কর্মী থেকে নৌকার মাঝি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে এক সময়ের সক্রিয় শিবির কর্মী আলাল মাস্টার এবার নৌকার মাঝি হয়েছেন। এমনই অভিযোগে সমালোচনার ঝড় উঠেছে খোদ তৃণমূল আওয়ামী লীগে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন .লীগসহ এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মী।

চতুর্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনের উদ্দেশ্যে ঠাকুরগাঁও সদরের ১৭নং জগন্নাথপুর ইউনিয়ন থেকে এই আলাল মাস্টার .লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।

এই বিষয়ে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন .লীগের সভাপতি দেবেশ চন্দ্র শর্মা সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার রায় স্বাক্ষরিত বেশকিছু নথিপত্র অভিযোগনামা কেন্দ্রীয় .লীগে পাঠানো হয়। সেই অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে যে, আলাল মাস্টার এক সময় সক্রিয় শিবির কর্মী ছিলেন। পরে ২০০৯ ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনিয়ন জামায়াতের জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে বিএনপিতে যোগদান করেন তিনি। ২০১২ সালে বিএনপির দলীয় সমর্থন নিয়ে ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। এরপর ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির হয়ে ভোট কেন্দ্র ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, তিনি বিভিন্ন সময়ে .লীগ কর্মী ভোটারদের ওপরে নির্যাতন করতেন। এর পর ২০১৫ সালে সুকৌশলে তিনি .লীগে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে হঠাৎ তিনি .লীগের নৌকা প্রতীক পান এবং নির্বাচিত হন। এরপর .লীগে অনুপ্রবেশকারী নিয়ে আলোচনা শুরু হলে ২০১৯ সালে প্রকাশিত রংপুর বিভাগের ৩৮৯ জন অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় তার নাম উল্লেখ করা হয়।

জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম বলেন, ’সে ছাত্রজীবনে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আলালের সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে তাকে জগন্নাথপুর ইউনিয়নে জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব দেয়া হয়।

আলাল মাস্টারের বিষয়ে অভিযোগ পাঠানোর বিষয়ে কথা হয় জগন্নাথপুর ইউনিয়ন .লীগের সভাপতি দেবশ চন্দ্র শর্মার সঙ্গে। তিনি বলেন, ’আলাল মাস্টার তো সুবিধাবাদী লোক। যেই দল ক্ষমতায় থাকবে, সে সেই দলের হয়ে যাবে। তার ভাই জেনারুল এখনও ইউনিয়ন বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক। তার বেশির ভাগ কর্মী বিএনপি-জামায়াতের। উনি এই মেয়াদে .লীগ কর্মীদের সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখে বিরোধীদের নিয়ে কাজ করেছেন। আবার উনি নৌকার প্রতীকে নির্বাচনে গেলে .লীগ এই ইউনিয়নে হারতে পারে এমন শঙ্কায় আছি।

সেই ইউনিয়নের তৃণমূল .লীগ কর্মী মিজানুর বলেন, ’আলাল বাদে যে কাউকে নৌকা দেয়া হোক। আমরা পাশে থাকব। কিন্তু আলাল মাস্টার আর না। তিনি এবার টিআর, কাবিখা বয়স্কভাতার বেশির ভাগ সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন বিএনপি পন্থীদের। এতে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকার পরও কিভাবে সে নৌকা পায় তা বুঝতে পারি না। এবার প্রয়োজনে নির্বাচন করব না। তবুও তার নির্বাচনে আমরা থাকব না।

বিএনপির সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাল মাস্টার বলেন, ’আমি বিএনপির সমর্থন করতাম। জামায়াত-শিবিরের সঙ্গেও ছিলাম। কিন্তু এটা অনেক আগের কথা। এই বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।

 বিষয়ে ঠাকুরগাঁও উপজেলা .লীগের সভাপতি অরুণাংশু দত্ত টিটু জানান, হ্যাঁ আলাল মাস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আমি জানি। যারা নৌকা প্রতীক চেয়ে পায়নি তারাই সব অভিযোগ নিয়ে ঘুরছে। তিনি এর আগেও নৌকার প্রতীকে নির্বাচন করে জয় পেয়েছেন। হয়তো সেই কারণেই কেন্দ্র থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

 

এআরআই/এম. জামান

আর্কাইভ