• ঢাকা শনিবার
    ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

কড়া প্রতিবাদ সত্ত্বেও সীমান্তে থামছে না গোলাগুলি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২, ১১:০৪ এএম

কড়া প্রতিবাদ সত্ত্বেও সীমান্তে থামছে না গোলাগুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বারবার কড়া প্রতিবাদের পরও সীমান্তে মিয়ানমার বাহিনীর আগ্রাসী আচরণ থামছেই না। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে চলে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণ। ফলে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত ও তার আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তুমব্রু পশ্চিমকুল সীমান্তের ৩৩ নম্বর পিলারের পাশে বসবাস করেন হাশিম মিয়া। ঠিক তার বসতির বিপরীতে সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমারের একাধিক বাংকার রয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিনই মর্টারের গোলা ছোঁড়া হয় আর মাঝে মাঝে হেলিকপ্টার থেকেও ফেলা হয় গোলা। যা বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে যায়। মিয়ানমার বাহিনীর প্রতিদিনের এই ভয়াবহতার কথা প্রতিবেদককে বর্ণনা করছিলেন হাশিম।

তিনি বলেন, ‘তুমব্রু পশ্চিমকুল সীমান্তের কাঁটাতার ঘেঁষে মিয়ানমারের অনেকগুলো বাংকার রয়েছে। যা আমার বাড়ির সীমানা থেকে দেখা যায়। আর মর্টারের গোলার বিকট শব্দগুলোতে বাড়িঘর কেঁপে উঠে। মিয়ানমার বাহিনীর কোনো রাত-দিন নেই; যখন খুশি তখন গোলাগুলি ও বাংকার থেকে গোলা মারছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের ঢেকুবনিয়া থেকে যে গোলা মারছে তা বাংলাদেশের সীমান্তের ৪ কিলোমিটার অতিক্রম করে মিয়ানমারের পাহাড়ে পড়ছে। গোলাগুলি, মর্টার শেলের বিকট শব্দ আর যুদ্ধবিমান থেকে যে হামলা করছে এতে আমাদের আতঙ্ক দিনদিন বাড়ছে।’

একমাস পেরিয়ে গেলেও তুমব্রু সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষ বন্ধ হয়নি। এখনও গোলাগুলি, গোলা বর্ষণ ও হেলিকপ্টারের বিচরণ চলমান রয়েছে। প্রতিদিনই সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমার বাহিনী ছুড়ছে মর্টারের গোলা। ভয়ে কাজে যেতে পারছেন না শ্রমিকরা। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকসহ অনেকেই।

তুমব্রু পশ্চিমকুলের বাসিন্দা রফিকুল বলেন, ‘এতো বেশি গোলাগুলির শব্দ আর সহ্য হচ্ছে না। ছোট বাচ্চারা স্কুলে যেতে ভয় পায়। আমরাও ভয়ে চাষের জমিতে যেতে পারছি না।’

আরেক বাসিন্দা কবির বলেন, ‘সীমান্তে বেশি গোলাগুলি হওয়ায় বাগান মালিক কাজে যেতে নিষেধ করেছে। এখন কিভাবে সংসার চালাব।’

আরেক বাগান শ্রমিক নাছিম বলেন, ‘গোলাগুলির কারণে এক সপ্তাহ ধরে কাজে যেতে পারছি না। খুবই কষ্টে আছি। এখন কি হবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘মিয়ানমারের এমন কাণ্ডে সীমান্তের জনগণ সচেতন রয়েছে। সীমান্তে বসবাস করছি সমস্যা হবে। তবে এটা দ্রুত সমাধানে সরকার কাজ করছে। আশা করি, সীমান্তের পরিস্থিতি শিগগিরই স্বাভাবিক হবে।‘

এদিকে সীমান্তে গোলাগুলির কারণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। আর চেকপোস্টে তল্লাশির পাশাপাশি বাইরের কাউকে সীমান্তে যেতে দিচ্ছেন না তারা।

 

জেইউ

আর্কাইভ