• ঢাকা সোমবার
    ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে আতঙ্কের নাম ইকবাল চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম

কেরানীগঞ্জে আতঙ্কের নাম ইকবাল চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

হাজি মো. ইকবাল হোসেন। কেরানীগঞ্জ শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড শিপইয়ার্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মূর্তিমান আতঙ্ক এবং আব্বা বাহিনীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক। সম্প্রতি একটি নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সামনে আসে তার নাম। দুর্নীতি, অনিয়ম ও নারী অপহরণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

ইকবাল চেয়ারম্যান সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জকে অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় জমি, মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তিনি। রাজনৈতিক দলের নেতা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী তিনি। তার কথার বাইরে যায় এমন লোক এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে তিনি ছিলেন অতিসাধারণ একজন মানুষ। তবে কালক্রমে সরকারি দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদে ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে যান। এরপর তার বরাত খুলতে থাকে। হয়ে যান অঢেল সম্পদের মালিক।

ইকবালের আমলনামা : কিছুদিন আগে ইকবাল চেয়ারম্যান তার ভাই শাহাবুদ্দিন ক্যাপ্টেনের মাধ্যমে আফরোজা জেনারেটর নামক একটি প্রতিষ্ঠান দখলে নেন। এ কারণে আদালতে মামলা হয়। ২০১২ সালে তার চাচা মজিবর হাজি ওরফে জিনের বাদশার পক্ষে কেরানীগঞ্জে মমতাজ মার্কেট দখল করতে যান। এ সময় বিরোধী পক্ষের সঙ্গে ইকবালের বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। ওই সময় স্থানীয় আমবাগান স্কুলের ছাত্র সোহেল (৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। ওই হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে শিশু সোহেলের পরিবারকে মমতাজ মার্কেটে একটি দোকান এবং নগদ টাকা দিয়ে মামলাটি ধামাচাপা দেয়। ২০২০ সালে ধর্ষিতা এক নারীকে অপহরণ করে ইকবাল। এ খবর সব পত্রিকা এবং বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হয়। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইকবাল চেয়ারম্যান। এরপর তিনি নিজের বাহিনী নিয়ে ভিকটিমকে ভয় দেখিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য নিয়ে উলটো তার বিরুদ্ধেই সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। সর্বশেষ তার পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসী বাহিনী আব্বা গ্রুপের প্রধান এবং তার চাচাতো ভাতিজা আফতাব উদ্দিন রাব্বী চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জেরে রাসেল নামে এক যুবককে সারারাত নির্যাতনের পর নৃশংসভাবে হত্যা করে। প্রাণ বাঁচাতে নিজের বন্ধুকে বাবা ডাকার পরও নিস্তার মেলেনি নির্যাতন থেকে। বরং রাত যত গভীর হয়েছে নির্যাতনের মাত্রা ততই বেড়েছে। ১০ জানুয়ারি রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেলঘাটের পারভীন টাওয়ারের নিচতলায় রাব্বীর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ঘটে এই নৃশংস ঘটনা। পরে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ইকবাল চেয়ারম্যান। বস্তির লোক ভাড়া করে ভাতিজার পক্ষে রাস্তা অবরোধ করান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে আছেন ভাতিজা রাব্বী।

নিহত রাসেলের স্ত্রী সাথী আক্তার বলেন, ‘আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। হত্যাকাণ্ডের পর আমার পরিবারকে নানাভাবে মানুষিক নির্যাতন করছে রাব্বীর বাবা ও চাচা।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেলঘাট এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, রাব্বীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে রাসেলের পরিবারের কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছিলেন না। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন ইকবাল চেয়ারম্যান। তবে রাসেলকে নির্যাতনের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এরপর সাধারণ মানুষ সোচ্চার হলে পরিস্থিতি পালটে যায়।

আরেকটি অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইকবালের হেরেমখানা রয়েছে রাজধানীর ইস্কাটনের একটি অফিসে। কয়েক জায়গায় আছে রক্ষিতা। এত অপরাধের পরও ইকবাল চেয়ারম্যান বহাল-তবিয়তে আছেন। তবে তার খুঁটির জোর কোথায়? এই প্রশ্ন এলাকাবাসীর।

রাজস্ব ফাঁকি ও অনুসন্ধানের দাবি : ইকবাল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, কেরানীগঞ্জের কবুতরপাড়ায় তার আটতলা ভবন রয়েছে তিনটি, বলরামের সামনে সাততলা মার্কেট আছে দুটি, বয়েজ ক্লাবের রোডে নয়তলা একটি মার্কেট, চেয়ারম্যান বাড়ি রোডে সাততলা বাড়ি দুটি, খেজুরবাগে পাঁচতলা বাড়ি চারটি, তেলঘাটে পাঁচতলা বাড়ি ও মার্কেট দুটি, বড়ইতলা ডকইয়ার্ডে দুটি প্লটে ৩৬০ শতক জমি, বইতড়লায় দুটি টিনশেড বাড়ি, বইতড়লায় ওয়াশ মিল, খেজুরবাগে ওয়াশমিল, বসক্লাবের পাশে ওয়াশ মিল, কয়কটি জিন্স কাপড়ের ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান, নয়টি জাহাজ ও বাল্কহেড, একাধিক বিলাস বহুল গাড়ি, জাহাজ কাটা বা স্ক্র্যাপ ব্যবসা, ঘাট ইজারা, জাহাজ মালিক সমিতিসহ নামে-বেনামে ব্যাংক ডিপোজিট রয়েছে। এসব সম্পদের কর দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া দেশের বাইরেও তার বাড়ি রয়েছে। তার অবৈধ সম্পদের উৎস খুঁজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও দুদকের অনুসন্ধান দাবি করেছে এলাকাবাসী। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইকবাল চেয়ারম্যানকে বারবার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

হাজি মো. ইকবাল হোসেন। কেরানীগঞ্জ শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড শিপইয়ার্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মূর্তিমান আতঙ্ক এবং আব্বা বাহিনীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক। সম্প্রতি একটি নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সামনে আসে তার নাম। দুর্নীতি, অনিয়ম ও নারী অপহরণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

ইকবাল চেয়ারম্যান সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জকে অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় জমি, মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তিনি। রাজনৈতিক দলের নেতা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী তিনি। তার কথার বাইরে যায় এমন লোক এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে তিনি ছিলেন অতিসাধারণ একজন মানুষ। তবে কালক্রমে সরকারি দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদে ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে যান। এরপর তার বরাত খুলতে থাকে। হয়ে যান অঢেল সম্পদের মালিক।

ইকবালের আমলনামা : কিছুদিন আগে ইকবাল চেয়ারম্যান তার ভাই শাহাবুদ্দিন ক্যাপ্টেনের মাধ্যমে আফরোজা জেনারেটর নামক একটি প্রতিষ্ঠান দখলে নেন। এ কারণে আদালতে মামলা হয়। ২০১২ সালে তার চাচা মজিবর হাজি ওরফে জিনের বাদশার পক্ষে কেরানীগঞ্জে মমতাজ মার্কেট দখল করতে যান। এ সময় বিরোধী পক্ষের সঙ্গে ইকবালের বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। ওই সময় স্থানীয় আমবাগান স্কুলের ছাত্র সোহেল (৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। ওই হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে শিশু সোহেলের পরিবারকে মমতাজ মার্কেটে একটি দোকান এবং নগদ টাকা দিয়ে মামলাটি ধামাচাপা দেয়। ২০২০ সালে ধর্ষিতা এক নারীকে অপহরণ করে ইকবাল। এ খবর সব পত্রিকা এবং বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হয়। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইকবাল চেয়ারম্যান। এরপর তিনি নিজের বাহিনী নিয়ে ভিকটিমকে ভয় দেখিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য নিয়ে উলটো তার বিরুদ্ধেই সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। সর্বশেষ তার পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসী বাহিনী আব্বা গ্রুপের প্রধান এবং তার চাচাতো ভাতিজা আফতাব উদ্দিন রাব্বী চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জেরে রাসেল নামে এক যুবককে সারারাত নির্যাতনের পর নৃশংসভাবে হত্যা করে। প্রাণ বাঁচাতে নিজের বন্ধুকে বাবা ডাকার পরও নিস্তার মেলেনি নির্যাতন থেকে। বরং রাত যত গভীর হয়েছে নির্যাতনের মাত্রা ততই বেড়েছে। ১০ জানুয়ারি রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেলঘাটের পারভীন টাওয়ারের নিচতলায় রাব্বীর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ঘটে এই নৃশংস ঘটনা। পরে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ইকবাল চেয়ারম্যান। বস্তির লোক ভাড়া করে ভাতিজার পক্ষে রাস্তা অবরোধ করান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে আছেন ভাতিজা রাব্বী।

নিহত রাসেলের স্ত্রী সাথী আক্তার বলেন, ‘আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। হত্যাকাণ্ডের পর আমার পরিবারকে নানাভাবে মানুষিক নির্যাতন করছে রাব্বীর বাবা ও চাচা।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেলঘাট এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, রাব্বীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে রাসেলের পরিবারের কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছিলেন না। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন ইকবাল চেয়ারম্যান। তবে রাসেলকে নির্যাতনের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এরপর সাধারণ মানুষ সোচ্চার হলে পরিস্থিতি পালটে যায়।

আরেকটি অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইকবালের হেরেমখানা রয়েছে রাজধানীর ইস্কাটনের একটি অফিসে। কয়েক জায়গায় আছে রক্ষিতা। এত অপরাধের পরও ইকবাল চেয়ারম্যান বহাল-তবিয়তে আছেন। তবে তার খুঁটির জোর কোথায়? এই প্রশ্ন এলাকাবাসীর।

রাজস্ব ফাঁকি ও অনুসন্ধানের দাবি : ইকবাল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, কেরানীগঞ্জের কবুতরপাড়ায় তার আটতলা ভবন রয়েছে তিনটি, বলরামের সামনে সাততলা মার্কেট আছে দুটি, বয়েজ ক্লাবের রোডে নয়তলা একটি মার্কেট, চেয়ারম্যান বাড়ি রোডে সাততলা বাড়ি দুটি, খেজুরবাগে পাঁচতলা বাড়ি চারটি, তেলঘাটে পাঁচতলা বাড়ি ও মার্কেট দুটি, বড়ইতলা ডকইয়ার্ডে দুটি প্লটে ৩৬০ শতক জমি, বইতড়লায় দুটি টিনশেড বাড়ি, বইতড়লায় ওয়াশ মিল, খেজুরবাগে ওয়াশমিল, বসক্লাবের পাশে ওয়াশ মিল, কয়েকটি জিন্স কাপড়ের ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান, নয়টি জাহাজ ও বাল্কহেড, একাধিক বিলাস বহুল গাড়ি, জাহাজ কাটা বা স্ক্র্যাপ ব্যবসা, ঘাট ইজারা, জাহাজ মালিক সমিতিসহ নামে-বেনামে ব্যাংক ডিপোজিট রয়েছে। এসব সম্পদের কর দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া দেশের বাইরেও তার বাড়ি রয়েছে। তার অবৈধ সম্পদের উৎস খুঁজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও দুদকের অনুসন্ধান দাবি করেছে এলাকাবাসী। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইকবাল চেয়ারম্যানকে বারবার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আর্কাইভ