 
              প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩, ০৫:৫৯ পিএম
-20230906055931.jpg) 
                 ছবি: সংগৃহীত
বিতর্কের পরও সাড়ে ৯০০ কোটি টাকায় কেনা হয় ট্রেনের ৩০টি মিটারগেজ লোকমোটিভ। দু`বছর না যেতেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায়ই বিকল হচ্ছে। চালকরা বলছেন, নতুন ইঞ্জিন গঠনগতভাবে সেবা দেয়ার উপযুক্ত নয়। কারিগরি বিষয়েও নেই কোনো ধারণা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো সমীক্ষা ছাড়াই কেনা হয়েছে ইঞ্জিন। সমস্যা স্বীকার করে রেলওয়ে বলছে, সংকট সমাধানে নেয়া হচ্ছে উদ্যোগ।
ইঞ্জিন সংকট কাটাতে কোরিয়া থেকে ৩২২ কোটি টাকায় ১০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন কেনে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি। ইঞ্জিনগুলো ক্রয়চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়নি বলে আগেই আলোচনা উঠে।
তবুও ইঞ্জিনগুলো আনা হয় দেশে, যুক্ত করা হয় রেলের বহরে। এরপরই ইঞ্জিনগুলোর গঠন, প্রযুক্তি ও কারিগরি বিভিন্ন দিক নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। যদিও ইঞ্জিনগুলো খালাসের পর টেস্ট, ট্রায়াল রানের গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে এমন সব ত্রুটির কথা জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ইঞ্জিনগুলোর তিনটি ক্যাপিটাল কম্পোনেন্টে ভিন্নতা আছে, যা চুক্তিবহির্ভূত। চুক্তিতে তিন হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দেয়ার কথা থাকলেও দুই হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দেয়া হয়েছে। টিএ-১২ মডেলের অলটারনেটরের বদলে টিএ-৯ মডেল সংযোগ করা হয়েছে। ট্রাকশন মোটরে ২৯০৯-৯ মডেলের পরিবর্তে ২৯০৯ মডেল দেয়া হয়েছে।
সব সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে পরের বছর একই কোম্পানির কাছ থেকে আরও ২০টি একই মডেলের ইঞ্জিন কেনে রেলওয়ে।
মাত্র দু`বছর না যেতেই ভয়াবহ সব যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হতে শুরু করে নতুন লোকমোটিভ। চালকরা বলছেন, অল্পতেই গরম হয়ে যায় ইঞ্জিন, স্বল্প জায়গার ছোট ক্যাবে টিকে থাকা দায়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মাঝে মধ্যে বিকলও হয়ে পড়ছে ইঞ্জিন।
নতুন প্রযুক্তির এই ইঞ্জিন জটিল সফটওয়্যার আর কম্পিউটারভিত্তিক হওয়ায় এর সাথে খাপ খাওয়াতে পারেন না তারা। চালকদের দেয়া হয়নি কোনো ট্রেনিংও। ফলে তা সামলাতে পারছেন না তারা।
ইঞ্জিন মেকানিকরাও বলছেন, দেশের প্রচলিত রেল ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্য নয় নতুন ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ ও পরিচালনা পদ্ধতি। ফলে ঠিকমতো তা মেরামতও করতে পারছেন না তারা। আর নতুন এই ইঞ্জিনের মেরামতে তাদের দেয়া হয়নি কোনো প্রশিক্ষণও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো সমীক্ষা ছাড়াই কেনা হয়েছে ইঞ্জিন। বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হাদিউজ্জামান বলেন, ইঞ্জিনের সক্ষমতা, প্ল্যাটফর্মের শেডের উচ্চতা, লোকমোটিভের উচ্চতা- এসব বিবেচনা না করেই কেনাকাটা করা হয়েছে।
সংকট স্বীকার করে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) পার্থ সরকার বলছেন, আমাদেরও অনেক জানার বাকি আছে। ইতোমধ্যে সংকট সমাধানে প্রায় ২০০ জনকে ট্রেনিং দিয়েছি। আরও সমস্যা আছে। সেগুলো সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
তিন হাজার সিরিজ ইঞ্জিনের সদর দফতর চট্টগ্রামে বেশিরভাগ সময়ই যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে পড়ে থাকে পাহাড়তলী লোকোশেডে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      