
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত—এমন মত দিয়েছেন দেশের ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার। একই সঙ্গে ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোটার জানিয়েছেন তারা ভোট দিতে আগ্রহী। আর পিআর
সম্পর্কে ধারণা নেই ৫৬% ভোটারের।রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে ইনোভেশন কনসালটিংয়ের ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে, রাউন্ড–২’-এর প্রকাশিত প্রথম প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ইনোভেশন কনসালটিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জরিপের প্রধান সমন্বয়ক মো. রুবাইয়াত সরোয়ার প্রধান ফলাফল উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
দেশের ১০ হাজার ৪১৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের অংশগ্রহণে এ জরিপে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতা, নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে জনমত বিশ্লেষণ করা হয়।
জরিপের মূল ফলাফল:
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতা: ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সরকারের কার্যক্রমকে ‘ভালো’ বা ‘মধ্যম মানের’ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। তবে তরুণ, শিক্ষিত ও নগরবাসীদের মধ্যে সন্তুষ্টির হার তুলনামূলকভাবে কম।
নির্বাচন ও ভোট নিরাপত্তা: ৬৯ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে সক্ষম। এছাড়া ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ বিশ্বাস করেন তারা নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন। তবে পুলিশ ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তরুণ ও নগরবাসীর সংশয় বেশি।
আইনশৃঙ্খলা: ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ নাগরিক মনে করেন গত ছয় মাসে চাঁদাবাজি বেড়েছে। এ ধারণা নগর এলাকায় বসবাসকারী তরুণ ও উচ্চশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশি। তথ্যের প্রধান উৎস হিসেবে তরুণ ও শিক্ষিতদের বড় অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল।
নির্বাচনের সময়সূচি ও অংশগ্রহণ: ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন এবং ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে শিক্ষার্থী, উচ্চশিক্ষিত এবং কিছু পেশাজীবীদের মধ্যে নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে আপত্তি তুলনামূলক বেশি।
নির্বাচনি সংস্কার: সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি সম্পর্কে ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতা অবগত নন। তবে যারা এ বিষয়ে জানেন, তাদের মধ্যে এ ব্যবস্থার পক্ষে সমর্থনই বেশি। তরুণ ও উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা এবং সমর্থনের হার তুলনামূলকভাবে বেশি।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও যোগাযোগ বিষয়ে শিক্ষক ড. সাইমুম পারভেজ, বিডিজবস ডটকমের প্রধান নির্বাহী এ কে এম ফাহিম মাশরুর, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রশনা ইমাম এবং ব্রেইনের নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান।
ইনোভেশন কনসালটিং একটি আন্তর্জাতিক পরামর্শক, গবেষণা ও কারিগরি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের উদ্যোগে ‘পিপলস পারসেপশন অন ইলেকশন সার্ভে’ পরিচালিত হচ্ছে, যা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে ভয়েস ফর রিফর্ম ও বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (ব্রেইন)।