
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০১:১২ পিএম
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এবার পাসের হার এবং জিপিএ-৫-এর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফলাফলে এই পতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার (সি আর আবরার)।
তিনি জানিয়েছেন, এ ফলাফলের কারণ বিশ্লেষণে আগামী সপ্তাহেই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ডাটাভিত্তিক পর্যালোচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এবারের এইচএসসির ফলাফল অস্বস্তিকর। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ধরনের ফলাফলের দায় এড়াতে পারে না। তবে এই ফলাফল বাস্তবভিত্তিক। এর পেছনের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে আমরা তথ্য-উপাত্তভিত্তিক বিশ্লেষণ করব।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, শিক্ষার ফলাফল বাস্তবতার প্রতিফলন হোক। আগে পাসের হার এবং জিপিএ-৫-এর সংখ্যাকেই তৃপ্তির মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হতো। দেশে এমন এক সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল, যেখানে কেবল সংখ্যাই বড় সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফল ভালো দেখাতে গিয়ে শেখার সংকট আড়াল করার এই প্রবণতা আমরা বন্ধ করতে চাই।
উপদেষ্টা আরও জানান, শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, বিশেষ করে সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে যেন ন্যায্যতা বজায় থাকে।
চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গতবারের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম। ২০২৪ সালে এই হার ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
পরবর্তীতে ফলাফল নিয়ে রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এক ব্রিফিং করেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল হক।
তিনি জানান, এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয় ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন, এবং ফেল করেছে ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন শিক্ষার্থী।
বিভিন্ন বোর্ডে পাসের হার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা বোর্ডে ৬৪.৬২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৯.৪০, কুমিল্লায় ৪৮.৮৬, যশোরে ৫০.২০, চট্টগ্রামে ৫২.৫৭, বরিশালে ৬২.৫৭, সিলেটে ৫১.৮৬, দিনাজপুরে ৫৭.৪৯, ময়মনসিংহে ৫১.৫৪, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ৭৫.৬১ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬২.৬৭ শতাংশ।
এ ছাড়া তিনি জানান, এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন, যেখানে গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। অর্থাৎ, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
ড. এহসানুল হক আরও বলেন, পাসের হার ও জিপিএ-৫—উভয় ক্ষেত্রেই এবার এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। তবে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। এবার ২০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী ফেল করেছে, আর ৩৪৫টি প্রতিষ্ঠানে সবাই পাস করেছে।