প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে নাম আসায় পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) পদ থেকে মো. বাহারুল আলমকে বরখাস্তের জন্য সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। এবার তাকে বরখাস্ত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করা হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এসএম জুলফিকার আলী জুনু ডাকযোগে বরখাস্তের জন্য এ চিঠি পাঠিয়েছেন।
আবেদনে বলা হয়, জাতীয় জীবনের এক করুণতম অধ্যায় ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড, যেখানে দেশের ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ অসংখ্য সদস্য নির্মমভাবে শহীদ হন, এখনও জাতীয় বেদনা ও বিচার প্রত্যাশার এক অমলিন স্মৃতি হয়ে আছে। সম্প্রতি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের দাখিলকৃত রিপোর্টে বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. বাহারুল আলমের নাম উত্থাপিত হওয়ায় দেশের ন্যায়বিচার, জনআস্থা এবং বিচার প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে।
এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালনরত একজন কর্মকর্তার নাম এমন একটি রাষ্ট্রদ্রোহী ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখ হওয়া, ঘটনাটিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুতর করে তুলেছে। জাতির রক্তাক্ত স্মৃতি-বহনকারী এই ঘটনায় যে কোনও অভিযোগ, সংশ্লিষ্টতা, গাফিলতি বা দায়িত্বে ব্যর্থতা বিষয়ে পদে বহাল অবস্থায় থাকা ব্যক্তি অপরাধ বিচারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও জনবিশ্বাসের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। আপনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ, দুর্নীতি-দমন এবং রাষ্ট্রের আস্থা পুনঃনির্মাণ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্টে নাম আসা সত্ত্বেও তার দায়িত্বে বহাল থাকা, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থার ওপর জনমনে সন্দেহ তৈরি করছে।
ন্যায়বিচারের স্বীকৃতি শুধু আদালতের রায়ে নয়, বরং সরকারের যথাযথ পদক্ষেপে প্রতিফলিত হওয়াও জরুরি, আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এসএম জুলফিকার আলী বলেন, ‘২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্ত রিপোর্টে নাম আসায় বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমকে অবিলম্বে আইজিপি পদ থেকে অব্যাহতি বা বরখাস্ত করা করা হোক। মামলার পূর্ণাঙ্গ ন্যায়বিচার ও তদন্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার ভূমিকা ও দায় নির্ণয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এ ছাড়া, স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। যাতে রাষ্ট্র ও জনগণ উভয়ে ন্যায়বিচারের বাস্তব প্রতিফলন অনুভব করতে পারে।