 
              প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২২, ০২:৫৭ এএম
 
                 
                            
              ইন্দোনেশিয়ায় এক ফুটবল ম্যাচ ঘিরে দুই ফুটবল দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৮ জনের। কিছুদিন আগের এই ঘটনা সকলকে যেন নাড়িয়ে দিয়েছিল। এবার এই একই রকম ঘটনা ঘটল বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির দেশ আর্জেন্টিনায়। আবার ফুটবল মাঠে হাঙ্গামার ঘটনায় মৃত্যু হল এক সমর্থকের। দেড় শতাধিক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্সআয়ার্স থেকে থেকে ৫০ কিমি দূরে লা প্লাটা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যারাডোনার স্মৃতিবিজড়িত ক্লাব বোকা জুনিয়র্স ও জিমনেসিয়া। এই দুই দলের ম্যাচ শুরু হওয়ার পর থেকেই উত্তাপ সৃষ্টি হয়। মাঠে আসন সংখ্যার থেকেও বেশি দর্শক ঢুকতে চেয়েছিল। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করে, লাঠিচার্জ করা হয়। মাঠের ভিতরেও অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। গ্যাসের কারণে কেউই নিশ্বাস নিতে পারছিলেন না। ভিড়ের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক সমর্থকের মৃত্যু হয়র। দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে ম্যাচ শুরুর দশ মিনিটের মধ্যেই খেলা থামিয়ে দিতে বাধ্য হন রেফারি হার্নান মাসতার্নগেলো।
তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ নিরাপত্তাকর্মী সেখানে উপস্থিত না থাকায় বিশৃঙ্খলা আরও বেড়ে যায়। কর্তৃপক্ষ বলছে, গ্যালারি দর্শকে টইটম্বুর হওয়ার পরও স্থানীয় দল জিমনাসিয়ার সমর্থকরা জোর করে মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদের নিবৃত্ত করতে পুলিশ রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।
বুয়েনোস আইরেসের নিরাপত্তামন্ত্রী সার্জও বার্নি বলেন, এক সমর্থক মারা গিয়েছেন হৃদরোগে। মাঠের প্রত্যেকে কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত হয়েছে। একসময় নিশ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া যাচ্ছিল না। পরিস্থিতি একসময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না বলে ম্যাচ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদিও নিহত সেই ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি বেরোনি। ছবিতে দেখা যায়, কাঁদানে গ্যাসে পুরো স্টেডিয়াম ছেয়ে গিয়েছিল সে সময়। ধোঁয়ার কারণে অস্বস্তিতে খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের মুখ ঢাকতেও দেখা গেছে।
এদিকে ঘটনার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কাঁদানে গ্যাসের হাত থেকে বাঁচতে অনেক সমর্থক মাঠে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। তার মধ্যে ছিল খুদে সমর্থকরাও। ফুটবলাররা সাজঘরে ফিরে যাওয়ার আগেই মাঠের মধ্যে দর্শকরা ঢুকে পড়েন।
জিমনেসিয়ার ফুটবলার লিয়োনার্দো মোরালেস বলেন, আমার দু-বছরের ছেলে শ্বাস নিতে পারছিল না। যারা দর্শকাসনে ছিল তাদের জন্য চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। একটা ফুটবল ম্যাচ খেলতে এসে দেখছি আত্মীয়রা মৃত্যুর মুখে, এটা দেখতে কার ভালো লাগে?
এ ঘটনায় হতাশা ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। টুইটারে দেয়া বার্তায় তারা লিখেছে, এএফএ এই ধরনের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে। পাশাপাশি ফুটবলের চেতনাকে কলঙ্কিত করার মতো এ ধরনের ঘটনা নির্মূলে কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
আর্জেন্টিনার ফুটবলে এমন সংঘাতের দৃশ্য অবশ্য প্রথম নয়। বারবার তৈরি হওয়া সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি এড়াতে ২০১৩ সাল থেকে লা প্লাটার হুয়ান কারেমেলো জেরিলো স্টেডিয়ামে অতিথি দলের সমর্থকদের নিষিদ্ধ করেছে বুয়েন্সআয়ার্স কর্তৃপক্ষ।
জেডআই/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      