প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২৩, ০৪:৪৪ পিএম
আগামী ৫ অক্টোবর ভারতে শুরু হবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চূড়ান্ত পর্ব। শুরুর দুইদিন পর বাংলাদেশ তাদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষের নাম আফগানিস্তান। সেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে আজ মাঠে নামছে বাংলাদশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বেলা ২টায় শুরু হবে প্রথম ওয়ানডে। পরের দুই ম্যাচও হবে একই মাঠে।
সিরিজ শুরুর আগে শেষ দিনের অনুশীলনে ছিলেন না অধিনায়কসহ পাঁচ ক্রিকেটার। ঐচ্ছিক অনুশীলন হওয়ায় দিনটি বিশ্রামে কাটে নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, নাঈম শেখদের। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমরা বাকিদের নিয়ে অনুশীলন করলেও এর ব্যাপ্তি অন্য সময়ের মতো তেমন লম্বা ছিল না।
এটুকুতে মনে হতে পারে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটি হয়তো হালকাভাবে নিচ্ছে বাংলাদেশ। তাই প্রথম ওয়ানডের আগেও কি না পুরো দমে অনুশীলন করেনি দল। বরং এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে নিজেদের প্রস্তুতি নেওয়ার সেরা মঞ্চ হিসেবে এই সিরিজটিকেই দেখছেন তামিম ইকবাল।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে বোলারদের চেয়ে ব্যাটসম্যানদের কাজটাই হবে কঠিন, তা জানেন বাংলাদেশ অধিনায়কও। গত বছর দুই দলের সবশেষ সিরিজে চট্টগ্রামেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষায় ফেলে আফগানরা। প্রথম ম্যাচে মাত্র ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। সেখান থেকে আফিফ-মিরাজের অবিশ্বাস্য জুটিতে শেষ পর্যন্ত মেলে নাটকীয় জয়।
কিন্তু শেষ ম্যাচে আর রক্ষা হয়নি। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবিদের স্পিনে পর্যুদস্ত হয়ে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় দুইশর আগে। পরে রহমানউল্লাহ গুরবাজের দারুণ সেঞ্চুরিতে অনায়াস জয় পায় সফরকারীরা। সেটিই এখন পর্যন্ত দুই দলের শেষ ওয়ানডে। ওই জয়ের সুখস্মৃতি সঙ্গী করেই এবার নতুন সিরিজ শুরু করবে আফগানরা।
মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে সফরকারীদের বোলিং নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশও। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বকাপে চোখ রেখে আফগানদের বোলিংয়ের বিপক্ষে কঠিন লড়াই উৎরে সামনের দিনের জন্য ভালো রসদ জোগাড় করার তাগিদ দিলেন অধিনায়ক তামিম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, `আমার মনে হয়, এই সিরিজ, এশিয়া কাপ, এরপর নিউজিল্যান্ড সিরিজ যে আছে, এগুলো বিশ্বকাপের সেরা প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ। ওয়ানডে ক্রিকেটে আমরা অনেক দিন ধরেই ভালো খেলছি। এই সিরিজগুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজটা এমন দলের বিপক্ষে যাদের বোলিং আক্রমণ খুব ভালো। ওদের সঙ্গে যদি ভালো করতে পারি, তাহলে সামনের দিনগুলোর জন্য সেরা আত্মবিশ্বাস পাওয়া যাবে।`
এই সিরিজের পর শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপেও গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। দুই দলই সুপার ফোরের টিকেট পেলে, আরও বাড়বে মুখোমুখি দ্বৈরথের সংখ্যা। পরে ভারত বিশ্বকাপে ৭ অক্টোবর নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।
বাংলাদেশ অধিনায়কের মতো একই ভাবনা আফগান দলপতি হাশমতউল্লাহ শাহিদিরও। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানালেন, এই সিরিজ থেকে তামিম, সাকিবদের সম্পর্কে যত বেশি সম্ভব তথ্য জেনে নিতে চায় তার দল।
`বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপেও বাংলাদেশের বিপক্ষে আমাদের একটি ম্যাচ আছে। তো যে দলই জিতবে, এটি তাদেরকে আত্মবিশ্বাস দেবে। ভালো বিষয় হলো, এই তিন ম্যাচ খেলার পর তাদের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে এখনের চেয়ে বেশি জানতে পারব আমরা।`
এবারের বাংলাদেশ সফরে একমাত্র টেস্টে পাত্তাই পায়নি শাহিদির দল। ৫৪৬ রানের বিব্রতকর পরাজয় সঙ্গী হয় তাদের। ওয়ানডে সংস্করণেও অতীত পরিসংখ্যানে পিছিয়ে তারা। দুই দলের ১১ সাক্ষাতে বাংলাদেশের জয় ৭ ম্যাচে, ৪টি জিতেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের মাটিতে আফগানদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। বাংলাদেশে এসে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৪ পরাজয়ের বিপরীতে ৩টি জিতেছেন রশিদ-নবিরা। এছাড়া সব মিলিয়ে গত কয়েক বছরে ওয়ানডেতে ভালো খেলছে আফগানিস্তান। ২০২১ সালের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ১৮ ম্যাচে ১২ জয়ের বিপরীতে তারা হেরেছে ৫ ম্যাচে।