• ঢাকা শুক্রবার
    ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২

আর্জেন্টিনায় বিদায়ী ম্যাচ জোড়া গোলে রাঙালেন মেসি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১০:৪২ এএম

আর্জেন্টিনায় বিদায়ী ম্যাচ জোড়া গোলে রাঙালেন মেসি

ক্রীড়া ডেস্ক

আর্জেন্টিনার জার্সিতে দেশের মাটিতে এটাই তার শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) প্রীতি ম্যাচ আয়োজন না করলে মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে ‘নিজের’ মানুষের সামনে আর কখনও আলবিসেলেস্তের জার্সি গায়ে চাপানো হবে না। তাই বলাই যায়— ইতিহাসের সাক্ষী হলো আর্জেন্টিনা, সাক্ষী হলো বুয়েনস এইরেসবাসী!

বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। এটাকে নিজেই ‘বিশেষ’ ম্যাচ বলেছেন মেসি। গ্যালারিতে তাই ছিলেন মেসির স্ত্রী, সন্তানসহ ‍পুরো পরিবার। দর্শক ও সতীর্থদের ভালোবাসায় তৈরি হয় ভিন্ন এক পরিবেশ।

দেশের মাঠে আর্জেন্টিনার জার্সিতে শেষ ম্যাচটা জোড়া গোল করে রাঙিয়েছেন মেসি! রাঙালেন, না কাঁদালেন, কে জানে? জোড়া গোলের মতো উজ্জ্বল থাকলো ম্যাচ স্ট্যাট, রেটিং। এলএমটেনের পুরো ক্যারিয়ারের চিত্রই যেন আঁকা হলো আজ। মেসির শেষটা তো মেসির মতোই হতে হবে!

মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে বিদায়ী রাতটা গোল ছাড়া যে অসম্পূর্ণ থেকে যেতো, সেটা যেন নিজেই বুঝেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে হুলিয়ান আলভারেজের নিখুঁত পাস থেকে মেসি উপহার দিলেন এক ‘ট্রেডমার্ক’ চিপ শট, যা মুহূর্তেই উল্লাসে মাতায় গ্যালারির ৮০ হাজার দর্শককে।

দ্বিতীয়ার্ধেও জ্বলে ওঠেন মেসি। তার দ্রুত ফ্রি-কিক থেকে শুরু হওয়া আক্রমণে ৭৬ মিনিটে লাওতারো মার্টিনেজ করেন গোল, ব্যবধান দ্বিগুণ করে আলবিসেলেস্তেরা।

৪ মিনিট পর থিয়াগো আলমাদার সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় মেসি সহজ ট্যাপ-ইনে পূর্ণ করেন জোড়া গোল। মনে হচ্ছিল, ভক্তদের ভালোবাসার জবাব দিলেন ফুটবল মহাতারকা। এই দিন সমর্থকেরা গান ধরেছিলেন— ‘লিও মেসি আছে পাশে, পুরো পথ আমরা পাড়ি দেব একসঙ্গে।’

জাতীয় সংগীত চলাকালীন মেসির সঙ্গে তার তিন ছেলে

চলতি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এই গোল মেসির সপ্তম, যা তাকে সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসিয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাই ইতিহাসে তার গোলসংখ্যা দাঁড়ালো ৩৫-এ। জাতীয় দলের হয়ে আর্জেন্টাইন তারকা করেছেন ১১৪তম গোল, যার মধ্যে ১০০টিই এসেছে বাম পায়ের ঝিলিকে।

খেলার শেষ দিকে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল করেন রেফারি। ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে মেসির বিদায়ী মুহূর্ত বর্ণিল করে তোলে আর্জেন্টিনা।

আর্জেন্টিনার জার্সিতে দেশের মাটিতে মেসির প্রথম ম্যাচটা ছিল ২০ বছর আগে, এই মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে। সেটাও ছিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার শেষ ম্যাচ। দুই দশক পর সেই একই স্টেডিয়ামে মেসি খেলতে নামলেন কিন্তু অনুভূতিটা ছিল ভিন্ন। নিজের সেরাটা দিয়েই খেললেন আর কোটি ফুটবলপ্রেমিকে সিক্ত করলেন চোখের জলে।

চোখের পানি আটকাতে মেসিরও কি কষ্ট হচ্ছিল না?

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ইকুয়েডরের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে আর্জেন্টিনার বাছাই মিশন। তবে অগুন্তি ভক্তের হৃদয়ে মেসির এই মনুমেন্টাল রাত দীর্ঘদিন থেকে যাবে আর্দ্র স্মৃতি হয়ে।

আর্কাইভ