• ঢাকা শনিবার
    ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাত্র ১০ বছরে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে ১.১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৩, ০৫:০২ পিএম

মাত্র ১০ বছরে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে ১.১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গত এক দশক তথা মাত্র ১০ বছরে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে ১ দশমিক ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) জার্মান বন শহরে বার্ষিক জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের (কপ-২৮) অন্তর্বর্তী আলোচনায় উপস্থাপিত নতুন গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আর্থ সিস্টেম সায়েন্স ডাটা জার্নালে প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন সূচক-২০২২: জলবায়ু ব্যবস্থার ওপর মানুষের প্রভাবের সূচকগুলোর বার্ষিক আপডেট’ শীর্ষক গবেষণার বরাত দিয়ে সম্মেলনে গবেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, মানুষের বিভিন্ন পরিবেশবিরোধী কর্মকাণ্ড বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বিগত কয়েক দশকজুড়ে বিপুল পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়েছে।

এর ফলাফল হিসেবে বিগত দশকগুলোতে গড়ে প্রতি দশকে দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে নজিরবিহীনভাবে ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এক দশকে সবচেয়ে বেশি তথা ১ দশমিক ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে।

এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। দাবদাহের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, বিগত ২০০ বছরের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে ফেলেছে।
 


ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন (ডব্লিউডাব্লিউএ) এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, গত এপ্রিল মাস ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। তবে এপ্রিল শেষ হয়ে মে পেরিয়ে জুন মাসের শুরু হলেও অঞ্চলটিতে তাপমাত্রা কমানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

এপ্রিল এবং মে মাস সাধারণত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বছরের উষ্ণতম মাস। কিন্তু এই বছর এই দুই মাস শেষ হওয়ার পরও দেশগুলো যে পরিমাণ দাবদাহের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা আগে কখনো ঘটেনি।  

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের (ডব্লিউডাব্লিউএ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক জোট বলেছে যে, এপ্রিল মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দাবদাহ ছিল ২০০ বছরে মধ্যে সবচেয়ে বেশি। মানব সৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়া এমনটা ঘটা ‘কার্যত অসম্ভবই’।

থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ এপ্রিল। সেদিন দেশটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিবেশী লাওসে মে মাসে টানা দুদিন তাপমাত্রা ছিল ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি ভিয়েতনামের সর্বকালের তাপমাত্রার রেকর্ডও ভেঙে যায় সে সময়। মে মাসের শুরুর দিকে দেশটির গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  
 
এসবের পাশাপাশি ভিয়েতনাম, লাওস এবং থাইল্যান্ডের রাজধানীর তাপমাত্রা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বিভিন্ন ধরনের দূষণের অতিমাত্রার কারণে এসব দেশের বড় বড় শহরগুলোতে ধোঁয়াশার পরিমাণও বেড়ে গেছে যা তাপমাত্রা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। 

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক করলেও এ বিষয়ে দেশগুলোর সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তীব্র গরমে জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে।


এডিএস/

আর্কাইভ