• ঢাকা শনিবার
    ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

নীরবতা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২২, ১১:৩৩ পিএম

নীরবতা

বনশ্রী দাস

নীরবতার মধ্যেই আছে অস্ফুট কথার রাশি---
অবিকশিত কথা মালার অতল গভীরতা--
যা ভাষায় কুসুমিত করা একদম সম্ভব হয়ে ওঠে না।।
হঠাৎ কোনো দুঃখের-সুখের অনুভূতি আমাদের হতবাক ও হতবুদ্ধি করে দেয়,
আমরা তখন নিজেদের মনের কথা ব্যক্ত করতে ব্যর্থ হই। 
কখনো কখনো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা মানসিক চাপ, অবসাদ, ব্যস্ততার করণে আমরা ভাষা প্রয়োগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি,
ফলে মনের অজান্তেই অপরকে কটূক্তি করে আঘাত করে বসি----
কখনো বা মাত্রা ছাড়া রূঢ় বাক্যবাণে সম্পর্কের মধ্যেও চীর ধরে।
অনেক সময় আমরা সাধারণ ভালো কথাগুলোই রুক্ষভাবে বলে  অপরের কাছে অপ্রিয় হই বা সম্পর্ক চ্যুত হয়ে থাকি।
সম্পর্ক দীর্ঘ স্থায়ী করতে গেলে
সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে গেলে নীরব থাকাটা ভীষণ অত্যাবশ্যক। 
কথা কম বলে অপরের কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনা খুব প্রয়োজন,
তাতে অপর মানুষ টিকে সম্মান দেয়াই হয়-
দ্বিতীয়ত অপর মানুষ টিকে ভালো করে পরখ করে তাকে ভরসা করা যায় কি না বিচার করা যায়।
যে ব্যক্তি প্রয়োজনের বেশি কথা বলে-
দেখা যায়, সে আশি শতাংশই বাজে কথা বলে-
ফলে অপরের কাছে তার গুরুত্বটা ভীষণ মিটমিটে, ক্ষীণ হয়ে যায়-
দেখা যায় অনেকেই তাকে বিশ্বাস করতে পারে না, ভরসা করে না।
কথায় বলে সরল সোজা মানুষেরা কথা মেপে বলতে পারে না-
তারা অপরকে উজার করে মনের কথা বলে-
এই বর্তমান সমাজে সেই সব ব্যক্তিদের মূর্খ বলে, ননইনট্যেলেকটুয়াল বলে।
বুদ্ধিজীবীরা কথা বলার চেয়ে শোনে বেশি, কথা কেনে বেশি-
অপরের কাছে তারাই ইনট্যেলেকটুয়াল, তাদের কথার গুরুত্ব দেয়, সম্মান দেয় সকলে।
তবে অনেক পরিস্থিতে নীরবতা-
মানুষের কপালে কাপুরুষ, ভীত ও মেরুদণ্ড হীনের তকমা লাগিয়ে দেয়-
আবার কখনো অপরাধী বলে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আবার অনেক সময় নীরবতা মানুষকে অনেক সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির থেকে রক্ষাও করে থাকে,
বিপদগামী পরিবেশ থেকে উদ্ধার করে।
নীরবতাই মনের অন্তরালের সমাধিস্থ কথার রাশি
যা অপরের মনকে স্পর্শ করে অতি সহজেই
বা হৃদয়ে ক্ষত করে রক্ত ক্ষরণ করায়।।
নীরবতার সুবাসে আছে সমন্বয়, অনন্ত শান্তি বা অনতিক্রম্য ক্ষোভ----
তবুও নীরবতা সম্পর্ক দীর্ঘজীবী করার একমাত্র মূল মন্ত্র, রক্ষা কবজ।

আর্কাইভ