• ঢাকা রবিবার
    ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২

পুঁজি সংকট ও ব্যাংক ঋণের অভাবে প্রয়োজনের তুলনায় কম চামড়া কিনছে সৈয়দপুরের ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৩, ০৭:৫৭ পিএম

পুঁজি সংকট ও ব্যাংক ঋণের অভাবে প্রয়োজনের তুলনায় কম চামড়া কিনছে সৈয়দপুরের ব্যবসায়ীরা

ছবি: সংগৃহীত

নীলফামারী প্রতিনিধি

পুঁজি সংকট ও ব্যাংক ঋণের অভাবে নীলফামারীর সৈয়দপুরের চামড়া ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এতে এবার ঈদে প্রয়োজনের তুলনায় কম চামড়া কিনছে ব্যবসায়ীরা।

উত্তর জনপদের চামড়া ব্যবসার অন্যতম শহর সৈয়দপুর। এ শহরের একটি এলাকার নাম চামড়া গুদাম। পাকিস্তান আমলে উত্তরাঞ্চলে চামড়া ব্যবসার মূল কেন্দ্র বিন্দু ছিল সৈয়দপুর শহর। তাই সেই সময় এ শহরের একটি এলাকা চামড়া গুদাম হিসেবে পরিচিতি পায়।

তবে চামড়ার দাম কমে যাওয়াসহ নানাবিধ কারণে এ এলাকায় চামড়া ব্যবসায়ীর সংখ্যা কমতে থাকে দিন দিন। বন্ধ হয়ে পড়ে চামড়ার গুদামগুলোও।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত এক যুগ আগেও সৈয়দপুর থেকে কোরবানির ঈদে প্রায় ১০ কোটি টাকার চামড়া যেত ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে। কিন্তু গত ৬ থেকে ৭ বছর ধরে চামড়ার দরপতনের ফলে; এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা চরম লোকসান গুনছে। আর চলতি বছর পুঁজি সংকট ও ব্যাংক ঋণের অভাবে প্রয়োজনের তুলনায় কম চামড়া কিনছে ব্যবসায়ীরা।

তাদের অভিযোগ, তাদের পথে বসিয়ে দিয়েছেন ঢাকার ট্যানারি মালিকেরা। করোনা শুরুর আগের বছর থেকে ঢাকার ট্যানারি মালিকেরা চামড়া কিনে ঠিকমতো টাকা পরিশোধ করছে না। ফলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করলেও সব পুঁজি আটকা পড়েছে ট্যানারি মালিকদের কাছে। বছরের পর বছর বকেয়া তুলতে না পেরে অনেকে আদি ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। বর্তমানে হাতেগোনা ১৩ থেকে ১৪ জন চামড়া ব্যবসায়ী রয়েছেন সৈয়দপুরে।

শহরের আতিয়ার কলোনী এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী মো. সরফরাজ মুন্না বলেন, মূলত ব্যাংক ঋণসহ বিভিন্নজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চামড়া ব্যবসায়ীরা কোরবানির চামড়া কেনে। এরপর ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করে ব্যাংক ঋণসহ অন্যান্যদের ঋণ পরিশোধ করেন।

তবে কয়েক বছর ধরে ট্যানারি মালিকরা সৈয়দপুরের চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রায় ৩ কোটি টাকা বকেয়া রেখেছেন বলে জানান সরফরাজ। তিনি বলেন,

ব্যাংকের বিগত দিনের ঋণ ঠিকভাবে পরিশোধ করতে না পারায়; ব্যাংকগুলোও নতুন করে ঋণ দিচ্ছে না চামড়া ব্যবসায়ীদের। ফলে মারাত্মক পুঁজি সংকটে পড়েছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। এতে এবছর চাহিদা থাকলেও পর্যাপ্ত চামড়া কেনা সম্ভব হচ্ছে না। 

তিনি আরও বলেন, সরকার চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও, ট্যানারি মালিকেরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনতে চান না।

আর সৈয়দপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ও মেসার্স আল আমিন ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আজিজুল হক বলেন, বিগত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে ঢাকার ট্যানারি মালিকেরা বকেয়া টাকা পরিশোধ করছেন না। ফলে স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারছে না।

এতে ব্যাংকগুলো নতুন করে চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে পারছে না বলে জানান আজিজুল হক। তিনি বলেন, ফলে এবার ঈদে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ