• ঢাকা রবিবার
    ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে ৪০ বছরেও হয়নি ছাত্রলীগ নেতা হত্যার বিচার

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২১, ১০:৪০ পিএম

টাঙ্গাইলে ৪০ বছরেও হয়নি ছাত্রলীগ নেতা হত্যার বিচার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগ নেতা কল্যাণ বিহারী দাস হত্যাকাণ্ডের ৪০ বছরেও বিচার পায়নি তার পরিবার। পরিবারটি এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে চেয়ে আছে। পরিবারের লোকজন বলছেন, আর কত বছর হলে বিচার পাবেন কল্যাণ বিহারী দাস। বিগত ১৯৮১ সালের ৯ নভেম্বর তিনি খুন হন।

পরিবারের দাবি, কল্যাণ বিহারী হত্যাকাণ্ডের পর দলীয় সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কল্যাণ বিহারীর বাড়িতে এসেছিলেন। এ সময় তিনি তার মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে কল্যাণের হত্যাকারীদের বিচার করা হবে। কিন্তু তারপর আওয়ামী লীগ চারবার ক্ষমতায় এলেও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. কামাল হোসেনের পক্ষে ১৯৮১ সালের ৯ নভেম্বর সদর উপজেলার যুগনী হাটে তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ বিহারী দাস প্রচারণায় যান।

এ দিন বিকেলে ওই হাটে নির্বাচনী মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার সময় বিএনপির সমর্থকেরা হামলা করেন। হামলাকারীদের ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন কল্যাণ বিহারী। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করা হয়। মামলায় তৎকালীন বিএনপি সরকারের ধর্মমন্ত্রী আবদুর রহমানের পরিবারের লোক এবং কয়েকজন আত্মীয়স্বজনকে আসামি করা হয়।

কল্যাণ বিহারীর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তৎকালীন মন্ত্রীর স্বজনেরা আসামি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। পরে ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা খোরশেদ আলম (সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি) বাদী হয়ে আদালতে পুনরায় নালিশি মামলা করেন। আদালত ঘটনার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের পর আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামিপক্ষ এই মামলা বাতিলের জন্য টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের আবেদন নাকচ করে দেন।

পরবর্তী সময়ে আসামিরা জেলা ও দায়রা জজের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করেন। হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির পর আসামিদের রিভিশন খারিজ করে দেন। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু এরশাদ সরকারের আমলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মামলাটি রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারকাজ বন্ধ করা হয়। ফলে এই হত্যার আর বিচার হয়নি। কল্যাণ হত্যার পর ১৯৮১ সালের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টাঙ্গাইল শহরের আদালত রোডে অবস্থিত কল্যাণ বিহারীদের বাসায় আসেন।

কল্যাণ বিহারীর ভাই বিমান বিহারী দাস বলেন, সেদিন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে কল্যাণ হত্যার বিচারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এরপর আওয়ামী লীগ চারবার সরকার গঠন করেছে। অথচ আজও হত্যাকারীদের বিচারের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। কল্যাণের বড় বোন বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা শেফালী দাস কল্যাণ হত্যার বিচারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এস/এএমকে/এম. জামান

আর্কাইভ